কুমিল্লার চারটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী, নতুন মুখ ছয়জন

কুমিল্লার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চক্রতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রোববার বেলা ১১টায়
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার ১১ আসনের মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তাঁরা হলেন কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনে মো. আবদুল মজিদ, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে মো. আবুল কালাম আজাদ ও কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে এম এ জাহের।

এ ছাড়া কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও তিতাস) আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. আবদুস সবুর এবং কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

রোববার ভোট গ্রহণের পর রাতে ওই ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে ৮টিতে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ১১ জন।

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, কুমিল্লা-২ আসনের মো. আবদুল মজিদ হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। মজিদ আওয়ামী লীগের মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল আলমকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মজিদ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই জয় হোমনাবাসীর।

কুমিল্লা-৩ আসনের জাহাঙ্গীর আলম কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দুবারের সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের কর্মীরা আমার মতো তৃণমূলের লোককে ভোট দিয়েছেন।’

কুমিল্লা-৪ আসনের আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা-৫ আসনের এম এ জাহের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচন করে বিজয়ী হন।

আবুল কালাম আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও দুবারের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে পরাজিত করেছেন। আর জাহের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসেম খান, বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়াকে পরাজিত করেন।  

আবুল কালাম আজাদ বলেন, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দেবীদ্বারবাসী রায় দিয়েছেন। আর এম এ জাহের বলেন, ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচংবাসীর কাছে তিনি কৃতজ্ঞ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সবুর এবারই প্রথমবার নির্বাচন করেন। আবদুস সবুর বলেন, ‘দাউদকান্দি ও তিতাসের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিলেন। আমি নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন।’

কুমিল্লা-৮ আসনের আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুক্ত হওয়ার ২৭৪ দিনের মধ্যে তিনি সংসদ সদস্য হলেন। তিনিও প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। আবু জাফর বলেন, ‘উন্নয়নবঞ্চিত বরুড়াবাসী করোনা মহামারিতে কাউকে পায়নি। আমি পাশে ছিলাম। সমাজসেবামূলক কাজ, দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ মনোবল আমাকে জয়ী করেছে। আমি নেত্রীর কাছে, দলের জ্যেষ্ঠ ও তরুণ নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’