আচরণবিধি মেনে চলতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে ইসির চিঠি

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক মোজাম্মেল হক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় অংশ না নিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিটি মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বরাবর পাঠানো হয়েছে।

২৭ এপ্রিল স্বাক্ষরিত চিঠিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একটি সূত্রে অবহিত হয়েছি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ২৯ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় কতিপয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য আগমন করবেন।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ২২-এ উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে উক্তরূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল তাঁর ভোট প্রদানের জন্য ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। উক্ত বিধিমালার সংজ্ঞায় “সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি” অর্থ প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাঁদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বোঝানো হয়েছে।’

বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। মন্ত্রীর একান্ত সচিবের ওই চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।

চিঠিতে ২৯ এপ্রিল, অর্থাৎ আজ শনিবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের গাজীপুরে আসার কথা বলা হলেও রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত তিনি আসেননি। গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বলেন, আজকের কর্মী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল, কিন্তু জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি।

এদিকে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নষ্ট হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সংখ্যক লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে আমাদের আচরণবিধি মেনে চলার জন্য সতর্ক করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অথচ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা মিছিল, শোভাযাত্রা, কর্মী সভার আড়ালে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো শোকজ করা হচ্ছে না। নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না, সে ব্যাপারে আমরা শঙ্কিত।’ তিনি নির্বাচন কমিশনকে সবার ক্ষেত্রে সমান দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।