পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাবে আরও দুটি ট্রেন

ট্রেন
প্রতীকী ছবি

পদ্মা সেতু দিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে রাজবাড়ী হয়ে ঢাকায় যাবে আরও দুটি ট্রেন। ট্রেন দুটি হলো—আন্তনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ও নকশিকাঁথা মেইল ট্রেন। এতে আনন্দিত রাজবাড়ীবাসী।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী থেকে আন্তনগর মধুমতি এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াত করে। ট্রেনটিকে বর্ধিত করে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। নকশিকাঁথা মেইল ট্রেনটি চলাচল করে খুলনা থেকে রাজবাড়ী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত। এই ট্রেন সব স্টেশনেই থামে। প্রস্তাবে এই ট্রেন রাজবাড়ীর পাঁচুরিয়া জংশন থেকে রুট পরিবর্তন করে ঢাকায় চলাচলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাজবাড়ী থেকে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত একটি ট্রেন দুবার চলাচল করবে।

১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ড মো. আবদুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ড মো. আহসানউল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে আরও দুটি ট্রেন চলাচলের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেটি কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে আরও দুটি ট্রেন চলাচল করবে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্তাবিত সময়সূচি অনুযায়ী, আন্তনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে আসবে। ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা দুইটায়। ঢাকা থেকে বেলা তিনটায় ছেড়ে রাজশাহী পৌঁছাবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। ট্রেনটির যাত্রাবিরতি থাকবে ঈশ্বরদী জংশন, পাকশী, ভেড়ামারা, মিরপুর, পোড়াদহ, কুষ্টিয়া কোর্ট, কুমারখালী, খোকসা, পাংশা, কালুখালী জংশন, রাজবাড়ী, পাঁচুরিয়া জংশন, আমিরাবাদ, ফরিদপুর, তালমা, পুকুরিয়া, ভাঙ্গা, শিবচর, পদ্মা ও মাওয়া স্টেশনে।

অন্যদিকে নকশিকাঁথা মেইল ট্রেনের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে, যাত্রীসেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে কমিউটারে উন্নীত করার জন্য যাত্রাবিরতি সীমিত রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে যশোর ক্যান্টনমেন্ট, মোমিনপুর, জগতি, চড়াইকোল, সূর্যনগর স্টেশনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ট্রেনটির প্রস্তাবিত সময়সূচি অনুযায়ী, খুলনা থেকে রাত সাড়ে ১১টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে পরদিন সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। ঢাকা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে খুলনা পৌঁছাবে রাত ১০টা ১০ মিনিটে। ট্রেনটির যাত্রাবিরতি থাকবে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, যশোর, মোবারকগঞ্জ, কোর্ট চাঁদপুর, সাফদারপুর, আনসারবাড়িয়া, উথলী, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, আলমডাঙ্গা, হালসা, পোড়াদহ, কুষ্টিয়া কোর্ট, কুষ্টিয়া, কুমারখালী, খোকসা, মাছপাড়া, পাংশা, কালুখালী, বেলগাছি, খানখানাপুর, আমিরাবাদ, ফরিদপুর, বাখুণ্ডা, তালমা, পুকুরিয়া, ভাঙ্গা, ভাঙ্গা জংশন, শিবচর, পদ্মা, মাওয়া, শ্রীনগর, নিমতলী ও গেন্ডারিয়ায়।

অভিজিৎ সোম নামের এক আইনজীবী যাত্রী বলেন, ‘আমাকে প্রায়ই ঢাকা যেতে হয়। সাধারণত বাসে ঢাকা যাই, তবে আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ট্রেনের বিকল্প নেই। কিছুদিন আগে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়। এটি ছিল রাজবাড়ীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। তবে একটি সন্ধ্যায় ও একটি গভীর রাতে রাজবাড়ী হয়ে ঢাকা যেত। এতে অনেকের সমস্যা হতো। অনেকের দাবি ছিল, সকালের দিকে ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার। এখন আর সেই সমস্যা থাকল না।’

রেলওয়ের রাজবাড়ী ট্রাফিক পরিদর্শক (পরিবহন ও বাণিজ্যিক) শফিকুর রহমান ১ ডিসেম্বর থেকে ট্রেন চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।