রাজশাহীতে আষাঢ়ের শেষ দিনে ঝরল মুষলধারে বৃষ্টি, শহরে জলাবদ্ধতা

ময়লা–আবর্জনার কারণে ভরে গেছে নালা। ফলে বৃষ্টির পর সড়কে জমে আছে পানি। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

এবার অন্য রকম এক আষাঢ় পেল রাজশাহী। বাংলা এই মাসের প্রায় প্রতিদিনই ঝরেছে বৃষ্টি। মাসের শেষ দিনও ব্যতিক্রম ছিল না। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৯০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ়ের শেষ দিনের বৃষ্টিতে রাজশাহী শহরের অনেক জায়গায় পানি জমেছে। এতে দুর্ভোগেও পড়েছেন অনেকে।

আষাঢ়ে এটি সর্বাধিক পরিমাণ বৃষ্টি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কার্যালয়। রাজশাহী আবাহওয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার কোরবানির ঈদের আগে ও পরে তাপপ্রবাহ ছিল। সে সময় কোনো বৃষ্টি হয়নি। ১৫ জুন আষাঢ়ের প্রথম দিন দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০ মিলিমিটারের বেশি হয়েছে কম দিনই। চতুর্থ দিনে বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছিল ৫১ দশমিক ২ মিলিমিটার, নবম দিনে ৩৭ দশমিক ৭  মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আষাঢ়ের ২৫তম দিনে বৃষ্টি হয় ৩৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এরপর আজই রাজশাহীতে বেলা ১টা পর্যন্ত ৯০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলো। এর মধ্যে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৪১ মিলিমিটার।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আনোয়ারা খাতুন বলেন, আষাঢ়ে কমবেশি প্রায় সব দিনই বৃষ্টি হয়েছে। তবে গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ বেলা ১টা পর্যন্ত বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এখন পুরো বর্ষাকাল। এই সময়ে বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক।

এদিকে আষাঢ়ের বৃষ্টিতে রাজশাহী শহরের অনেক জায়গা ডুবে গেছে। রাস্তায় পানি জমে থাকায় নগরবাসীর চলতে অসুবিধা হয়েছে। শহরের লক্ষ্মীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, কাদিরগঞ্জ, উপশহরসহ ৮ থেকে ১০টি স্থানে বৃষ্টির তিন ঘণ্টা পরও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের সামনে হাঁটুপানি দেখা গেছে। হাসপাতালের সামনের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

ওই এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় ড্রেনেজব্যবস্থা একটু খারাপ। হাসপাতালের পেছনে রাস্তায় কাজ চলছে। ওই দিকে হয়তো পানি যেতে পারছে না। আবার হাসপাতালের সামনের রাস্তায় ফুটপাতে অনেকগুলো খাবারের দোকান। এসব দোকানের আবর্জনা ওখানে ফেলার কারণে হয়তো রাস্তার পানি নালায় নামতে পারছে না। নালাগুলো দ্রুত পরিষ্কার করা দরকার।

বৃষ্টি বেলা সাড়ে ১২টায় থেমে গেলেও নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় রাস্তাতে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। এই এলাকায় রাস্তার পানি নালায় নামতে পারছে না। নালাগুলোতে পানিপ্রবাহ থেমে আছে। শিক্ষার্থীদের পানি মাড়িয়ে রাস্তা পারাপার হতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন জানান, কিছু এলাকায় পানি জমে গেছিল। তাঁদের একটি দল বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকেই এসব স্থানে ছুটে গেছে। তারা দেখতে পায়, কিছু এলাকায় নির্মাণকাজের জন্য পানিপ্রবাহ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আবার কিছু এলাকায় কিছু ময়লা জমেছিল। সেগুলো দূর করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই পানি নেমে যাবে।
শেখ মো. মামুন আরও বলেন, তাঁরা বারবার নগরবাসীকে বলে আসছেন, তাঁরা যেন নালায় কোনো ময়লা না ফেলেন। অনেকে নির্মাণকাজের পরিত্যক্ত সরঞ্জাম নালায় ফেলে প্রবাহ বন্ধ করে দেন।