যশোর জেলা ছাত্রলীগের বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ২৩ জনের জেলা কমিটির মধ্যে ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। তাঁদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া ১১ নেতা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমরান হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার, কায়েস আহমেদ, আবদুর রউফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান, আসাদুজ্জামান, আশিকুর রহমান, মাসুদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম ও ফাহমিদ হুদা।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ঢাকায় ছাত্র সমাবেশ করবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে যশোর শহরের গাড়িখানায় অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। সভায় জেলার আট উপজেলাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কলেজের ২৮টি ইউনিটের মধ্যে বেশির ভাগ নেতা উপস্থিত ছিলেন না। এর মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের ১১ জন পদধারী নেতা উপস্থিত না থাকায় তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নোটিশ পাওয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রস্তুতি সভা শুরুর ১০ মিনিট আগে আমার মুঠোফোনে কল আসে। তখন আমি ওই কলে যুক্ত হতে পারিনি। পরে দেখলাম, জেলার শীর্ষ নেতাদের নম্বর থেকে ফোন এসেছে। তবে অন্য সদস্যদের মাধ্যমে জেনেছিলাম প্রস্তুতি সভার কথা। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের বৈঠক আহ্বানের পদ্ধতি এটা না। তারপরও আমি মিটিংয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার অসুস্থতা ও সারা দিন মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় মিটিংয়ে যোগ দিতে পারিনি। পরে ফেসবুকে দেখলাম, আমাদের ১১ জনকে শোকজ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি।’
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ‘বর্ধিত সভার কোনো চিঠি পাইনি। জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক কমিটির নেতাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সভাপতি ও সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে কোনো গতি নেই। কোনো সাংগঠনিক কাজে কমিটির কাউকে ডাকা হয় না। তারপরও শুনেছিলাম প্রস্তুতি সভা সম্পর্কে; তবে যাইনি তাঁদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে।’
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদের মুঠোফোন নম্বরে কয়েকবার কল দিলেও তাঁরা কেউ সাড়া দেননি।
জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৫ জুলাই সালাউদ্দিন কবিরকে সভাপতি ও তানজীব নওশাদকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগের ২৩ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দুই বছরের মধ্যেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। বিভিন্ন কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব প্রক্রিয়ায় জেলা কমিটির কাউকে যুক্ত করেন না সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ইতিমধ্যে জেলা ছাত্রলীগ কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে গেছে। বিভেদের কারণে অনেকেই সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশ নেন না।