সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাংবাদিক আবদুল হাকিম (শিমুল) হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। তাঁর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আবদুল হাকিম দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর উপজেলার তৎকালীন প্রতিনিধি ছিলেন। শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জাফরের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হোসেন, সাবেক সভাপতি বিমল কুণ্ডু, সাংবাদিক আবদুল হাকিমের স্ত্রী নুরুন্নাহার, আবুল কাশেম, জহুরুল ইসলাম, জাকারিয়া মাহমুদ, মির্জা হুমায়ুন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে গুলি করে সাংবাদিক আবদুল হাকিমকে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ আসামিপক্ষের নানা কূটকৌশলের কারণে আট বছরেও বিচারকাজ শুরু হয়নি। ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি শাহজাদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে মামলাটি সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং পরবর্তী সময় রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। আসামিপক্ষ নানা অজুহাতে সময় প্রার্থনা করে অভিযোগপত্র গঠনে বাধা দেয়।
বক্তারা জানান, ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সাংবাদিক আবদুল হাকিম হত্যা মামলা চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই মামলাটি রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এরপর আসামিপক্ষ হাইকোর্টে রিট করে এটি স্থগিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল হাকিমের স্ত্রী নুরুন্নাহার সুপ্রিমকোর্টের অ্যাপিলেড ডিভিশনে ‘লিভ টু আপিল’ করলে অ্যাপিলেড ডিভিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই থেকে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারকার্য শুরু হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ হত্যা মামলার বিচারকার্য শেষ করতে এবং খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে সাংবাদিক আবদুল হাকিমের স্ত্রী নুরুন্নাহার বলেন, ‘শিমুল হত্যা মামলার সব আসামিই জামিনে বাইরে থাকায় আমরা সব সময় ভয়ে থাকি। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ হত্যাকারীদের বিচার শুরু না হওয়ায় মনে আর প্রবোধ দিতে পারছি না। আমরা দ্রুত খুনিদের শাস্তি দেখতে চাই।’
এই কর্মসূচিতে আবদুল হাকিমের ছেলে আল নোমান নাজ্জাশি সাদিক, মেয়ে তামান্না-ই-ফাতিমা, মামা আবদুল মজিদ, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি শামছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা হালিমুল হকের (মিরু) সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় মাহমুদের সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আবদুল হাকিম গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হালিমুল হকসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।