শিক্ষার্থী পরিচয়ে প্রতারণা, বাসাভাড়া নিয়ে দেড় বছর ক্যাম্পাসেই থেকেছেন

সীমান্ত ভৌমিকছবি: তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে নেওয়া।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে নিয়েছিলেন বাসাভাড়া। নিজেকে কখনো বাংলা বিভাগ আবার কখনো মেরিন সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে যুক্ত হয়েছিলেন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠনেও। একাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়েছিলেন ঋণ। এক বছর এভাবে চলার পর অবশেষে ধরা পড়েছেন তিনি।

ধরা পড়া ওই ব্যক্তির নাম সীমান্ত ভৌমিক (১৯)। তিনি খুলনা জেলার সদর উপজেলা বাসিন্দা। তিনি ২০২৪ সালের জুনে শিক্ষার্থী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। এরপর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। তবে এক বছরে তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে হাতে নাতে ধরেন। পরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে সোপর্দ করেন।

জানতে চাইলে ভুয়া পরিচয় শনাক্ত করা অন্যতম শিক্ষার্থী যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মো. ইখলাস বিন সুলতান বলেন, কিছুদিন ধরে আচরণগত অসংগতি ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার ঘটনায় সীমান্তের বিষয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে কৌশলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর এক পর্যায়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি আর সীমান্ত দুজনই দক্ষিণ ক্যাম্পাসে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় থাকতাম। সে সুবাদে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। সন্দেহজনক আচরণের কারণে আজ আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি মেরিন সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও বিভাগে কেউ তাঁকে চেনেন না। তাই আমরা তাঁকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে সোপর্দ করি।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন অনেক সচেতন। তাঁদের উদ্যোগেই দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী সেজে ঘুরে বেড়ানো সীমান্তকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, সে বহুজনের সঙ্গে লেনদেনে জড়িত। তাঁকে নিরাপত্তা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া শিক্ষার্থী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা এবার প্রথম নয়। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর রাতেও মোহাম্মদ মিনহাজ নামের একজনকে আটক করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তিনি অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতেন।