শহীদ সুমাইয়া ও রিয়া গোপের পরিবারের খোঁজ নিলেন উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে শহীদ পোশাককর্মী সুমাইয়া ও ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটি এলাকায় রিয়া গোপের বাড়িতে এবং বেলা সাড়ে ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি নতুন মহল্লায় সুমাইয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এ সময় তিনি রিয়ার মা বিউটি ঘোষ এবং সুমাইয়ার মা আসমা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন। উপদেষ্টা তাঁদের খোঁজখবর নেন এবং সান্ত্বনা দেন।
সুমাইয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, রাষ্ট্র তাঁদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আমরা জানতে চাই, তাঁদের পরিবার কেমন আছে, কী সংকটে আছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকা সুযোগ-সুবিধাগুলো কীভাবে শহীদ পরিবারের কল্যাণে কাজে লাগানো যায়, তা দেখতে চাই। শিশুদের যেন ঠিকভাবে বড় করা যায় এবং একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়।’
শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘শহীদ ১১ নারীকে নিয়ে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় একটি গবেষণাধর্মী সংকলন প্রকাশ করবে। আমরা আমাদের মেয়েদের হারিয়ে যেতে দেব না। মেয়েদের অনেক বীরত্বগাথা আছে, কিন্তু সেগুলো সামনে আসে না। আমাদের দায়িত্ব, এই ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা।’
পরিবারগুলোতে ভাতা–সংক্রান্ত জটিলতা আছে উল্লেখ করে শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের একটি স্পষ্ট ভাবনা আছে। শহীদদের শিশুকে এবং তাকে লালনপালনকারী অভিভাবককে আমরা প্রাধান্য দিতে চাই। সেই সঙ্গে পরিবারের যেসব সদস্য হকদার, তাদেরও যেন অবহেলা না হয়। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করছি। কোনো ভুল হলে সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন আমাদের চোখ খুলে দেন।’
জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো কিছু দ্রুত হয় না। কিন্তু এটাও ঠিক, ২৪ জুলাইকে কেন্দ্র করে আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে, আইনি সংস্কার এনে নিজস্ব ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করেছি। এর চেয়ে দ্রুত করা সম্ভব নয়। তাড়াহুড়া করতে গেলে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হতে পারে। আমরা চাই, বিচার হোক সময় নিয়ে, যাতে কোনো ভুল না হয়। অন্যায় হলে তা সংশোধন করাও আমাদের দায়িত্ব। সাংবাদিকদের বলব, সমালোচনা করুন, তবে সমাধানের দিকটাও দেখান।’
এ সময় শারমীন মুরশিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিরব রায়হান প্রমুখ।