নরসিংদীতে আ.লীগ নেতাকে হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা

মাহাবুবুল হাসান
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হাসান (৪০) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে আসামি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিত ও ইউপি সদস্য আতাউর ভূঁইয়াসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ৪২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহতের ছোট ভাই হাফিজ ইসলাম মাধবদী থানায় মামলাটি করেন। মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে অন্য আসামিদের নাম-পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি।

গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগীরথপুর এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলের সামনে মাহাবুবুল হাসানকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সঙ্গে থাকা সাঈদ হাসান (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৩৭) নামের দুই কর্মী। নিহত মাহাবুবুল হাসান সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগীরথপুর এলাকার মো. ইমাম উদ্দীনের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অন্য দিনের মতো মঙ্গলবারও বেশ রাত পর্যন্ত কর্মীদের নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছিলেন মাহাবুবুল হাসান। পরে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে কর্মীদের সঙ্গে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। রাত পৌনে ১২টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিতের ব্যক্তিগত কার্যালয়-সংলগ্ন ওবায়দুল্লাহ টেক্সটাইল মিলের সামনেই হামলার ঘটনা ঘটে। টেক্সটাইল মিলটির বিপরীত পাশের গলির মুখে দাঁড়ানো একটি বালুভর্তি ট্রাকের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন আসামিরা।

ট্রাকটি অতিক্রম করার সময় হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান ও গুলি ছোড়েন। হামলাকারীদের একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাহাবুবুল হাসানের কান থেকে ঘাড় বরাবর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। মাহাবুবুলকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সাঈদ ও ফরহাদ নামের তাঁর দুই কর্মী। পরে তাঁদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহাবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন

নিহতের স্বজনেরা জানান, ধারালো অস্ত্রের কোপে মাহাবুবুলের বাঁ পাশে কানের ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত ৮ ইঞ্চির মতো গভীর ক্ষত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তিনি মারা যান। পরদিন ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসক তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি গুলির অস্তিত্ব পান।

মামলার বাদী ও নিহতের ছোট ভাই হাফিজ ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেন এই প্রতিবেদক। তিনি কল না ধরায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, নিহতের ছোট ভাই হাফিজ ইসলাম ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আগে আটক করা ৬ জনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এজাহারভুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।