ত্রিশালে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রামবাসীর ওপর হামলার অভিযোগ

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ইছামতী গ্রামে ভাঙচুর হওয়া একটি বাড়ি। গতকাল সন্ধ্যায় তোলা
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জমির ফসল নষ্ট করে বালু পরিবহনের প্রতিবাদ করায় বালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বাদলের নেতৃত্বে গ্রামবাসীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চেয়ারম্যানের অনুসারীরা ইছামতী গ্রামের অন্তত ১০টি বাড়ি ও দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করেন। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ব্যক্তিরা হলেন লিটন ঢালী, শহীদ ঢালী, সাকিব ঢালী, আতাব ঢালী, রিপন ফকির ও আবুল ফকির।

গতকাল সন্ধ্যায় সরেজমিনে ইছামতী গ্রামে গিয়ে কথা হয় হামলার শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ ব্রহ্মপুত্র নদ খননের বালু নিলামে কেনেন। এরপর অনেকের জমি ভাড়া নিয়ে বালু জমা রাখা ও পরিবহন করে আসছিলেন। চেয়ারম্যানের লোকেরা বালু উত্তোলন ও বিক্রি করেন। কিছুদিন আগে বৃষ্টিতে নদী থেকে বালু তুলে আনার সড়কটি ভেঙে যায়। পরে চেয়ারম্যানের লোকেরা গ্রামের বাসিন্দাদের জমির ওপর দিয়ে নতুন করে রাস্তা করেন। এতে অনেকের সবজির খেত নষ্ট হয়ে যায়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গতকাল সকালে গ্রামবাসী সবজির খেত নষ্ট করে বালুর ট্রাক চলতে বাধা দেন। এতে চেয়ারম্যানের লোকেরা ফিরে যান। এর ঘণ্টাখানেক পর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ভাড়াটে লোকেরা বাধা দেওয়া ব্যক্তিদের বাড়িতে ও ঢালিবাড়ি মোড়ে কয়েকটি দোকানে হামলা করেন। হামলাকারীরা দোকানের টিনের বেড়া কুপিয়ে ক্ষতি করে এবং দোকানের মালামাল এলোমেলো করেন।

হামলায় আহত মানিক ঢালী বলেন, ‘আমার করলার খেত নষ্ট করে রাস্তা করা হয়েছে। প্রতিবাদ করায় আমাকেও পায়ে কুপিয়ে আহত করেছে। হামলাকারীরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী। তারা নির্বিচারে মানুষদের মারধর করেছে।’ সুফিয়া বেগম নামের এক নারী বলেন, রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে নির্বিচারে ভাঙচুর ও মারধর করা হয়। এ সময় চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। বাড়ির শিশুসহ সবাই দৌড়ে পালিয়ে গেছে। অনেককে আহত করেছেন তাঁরা।

চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বলেন, বৈধভাবে ইজারা নেওয়ার পর তাঁর ছেলে বালু উত্তোলনের কাজ তদারক করতে গেলে কয়েকজন বাধা দেন এবং মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে তিনি ছেলেকে দেখতে যান। তাঁর কোনো লোক কাউকে মারধর করেননি।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈনউদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওই এলাকার ঢালী পরিবার নামের একটি পরিবারের বিরোধ অনেক দিনের। এর জেরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে বলে জেনেছেন। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।