কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দ্বন্দ্ব, রামগঞ্জ বিএনপির ৫ নেতাকে অব্যাহতি
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ পাঁচ নেতাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে অব্যাহতির চিঠি তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে এ্যানী, সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন ওরফে সাবু ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান অব্যাহতির এ চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে ১২ নভেম্বর নাজিম উদ্দিনসহ অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা কমিটি। ১৮ নভেম্বর তাঁরা ওই নোটিশের জবাব দেন।
অব্যাহতিপত্রে বলা হয়েছে, নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই জেলা কমিটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলে প্রচারণা চালিয়েছেন অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা। জেলার নেতৃত্বের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। ৭ নভেম্বর রামগঞ্জ শহরে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। দলীয় শৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক রীতিনীতির পরিপন্থী হওয়ায় তাঁদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও শেখ মাহাবুবুর রহমানকে সদস্যসচিব করে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট রামগঞ্জ উপজেলা কমিটি করা হয়। একই সময়ে শেখ মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও আলমগীর হোসেনকে সদস্যসচিব করে রামগঞ্জ পৌর বিএনপির ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত বাকি নেতারা হলেন রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সাহাবুদ্দিন, আবদুর রহিম, পৌর বিএনপির সদস্যসচিব মিয়া আলমগীর হোসেন ও সদস্য জাকির হোসেন মোল্লা।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের দ্বন্দ্ব বেধে যায়। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ এক পক্ষ কমিটি বাতিল বা স্থগিতের দাবিতে সমাবেশ করে। অন্য পক্ষ কমিটি বহাল রাখার পক্ষে সভা করেছিল। ৭ নভেম্বর পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচি পালন করে উভয় পক্ষ।
অব্যাহতিপত্র পেয়েছেন জানিয়ে নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ত্যাগীদের বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছিল। এতে নেতা-কর্মীরা কমিটি মেনে নিচ্ছেন না। আমাকে আহ্বায়ক করলেও আমি নিজেও এ কমিটির বিরুদ্ধে। ত্যাগী ও প্রকৃত রাজনীতিকদের বাদ দিয়ে পকেটের লোক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দল রাজনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে আমরা আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করেছি। প্রত্যাশা ছিল, নতুন কমিটির নেতৃত্বে দল আরও সুসংগঠিত, সুদৃঢ় ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিন্তু নতুন কমিটি বাতিল করার দাবিতে সমাবেশ করে তাঁরা ঠিক করেননি। এটি করে তাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’