যশোরে দুর্নীতির মামলায় একজনের ২২ বছরের কারাদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নেওয়া যশোর-খুলনা পানিনিষ্কাশন পুনর্বাসন প্রকল্পের দুর্নীতির মামলায় খলিলুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধারায় ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশেষ জজ (জেলা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮২৪ টাকা জরিমানাও করা হয়।

দণ্ড পাওয়া খলিলুর রহমান যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কপালিয়া গ্রামের এরশাদ আলী শিকদারের ছেলে। পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০০০-২০০১ অর্থবছরে যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে যশোর-খুলনা পানিনিষ্কাশন পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় মনিরামপুর উপজেলার হরি ও শ্রী নদী খনন প্রকল্প হাতে নেয় যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ওই প্রকল্পে মাটি খননের জন্য ৮০ জন শ্রমিক নিয়ে লেবার কন্ট্রাক্টিং সোসাইটি (এলসিএস) গঠন করেন খলিলুর রহমান। দলনেতা হিসেবে তিনি ২০০১ সালের ২৯ এপ্রিল ঠিকাদারি নিবন্ধন জমা দেন। এরপর খননকাজের বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে পাউবো থেকে চেকের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি ওই অর্থ থেকে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮২৪ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় অভিযোগ উঠলে যশোর দুর্নীতি দমন ব্যুরো প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পায়।

২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন ব্যুরোর সহকারী পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেন। ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক এস এম বোরহান উদ্দিন।

মামলার দীর্ঘ শুনানির পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত খলিলুর রহমানকে ৪০৬ ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড, ৪২০ ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড, ৪৬৭ ধারায় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড, ৪৬৮ ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৪৭১ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন।

কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির মামলায় বিচারক পাঁচটি ধারায় খলিলুর রহমানকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। দণ্ডিত খলিলুর রহমান পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।