রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি, ছাত্রলীগের শোডাউন
সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের এক দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা টুকিটাকি চত্বর ও শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে অবস্থান নেন। কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়কে শোডাউন দিতে দেখা গেছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এ সময় দুই শিক্ষার্থীকে বই পড়তে দেখা গেছে। তাঁদের পেছনে এক শিক্ষার্থী একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যেখানে লেখা ছিল, ‘চাকরির বই পড়তেছি। তাই বিরক্ত করবেন না। কারণ, তাঁরা বলেছেন, জব পেতে প্রচুর বই পড়তে হবে।’
গতকাল সোমবার থেকে সারা দেশের আন্দোলনকারীরা এক দফা দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবিটি হলো সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আদালত নয়, আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। আপনারা এমন একটি পরিপত্র জারি করবেন, যাতে শিক্ষার্থী সমাজের অধিকার নিশ্চিত হয়। আমরা প্রথম থেকে চার দফা দাবি জানালেও সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে এখন একদফা দাবিতে এসেছি। শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি নয়, সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বেকার সমস্যা প্রকট। প্রায় ১০০ জন স্নাতক পাস শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৭ জনই বেকার। তাঁদের জন্য কোনো চাকরি নেই। ১০০–এর মধ্যে যদি ৩০টি নির্দিষ্ট শ্রেণিকে দিয়ে দেওয়া হয়, যারা আবার সংখ্যায় ১ শতাংশেরও কম, তাহলে সেটা বাংলাদেশের মতো একটা দেশে অবশ্যই বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমরা সব ধরনের কোটা বাতিল চাই না। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকুক। সেই কোটাগুলোই বাতিল চাই, যেগুলো বৈষম্য সৃষ্টি করে।’