জয়পুরহাটে চার সাংবাদিককে মারধরের মামলার তিন দিনেও গ্রেপ্তার নেই

জয়পুরহাটে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলায় আহত চার সাংবাদিক। শনিবার হাসপাতালেছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাটের পাঁচবিবির ফিচকাঘাট এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জমিতে জোর করে মাটি কাটা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চার সাংবাদিককে হামলা ও মারধরের ঘটনায় করা মামলার তিন দিনেও আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি। গত শনিবার রাতে পাঁচবিবি থানায় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের জয়পুরহাট প্রতিনিধি মো. জুয়েল শেখ বাদী হয়ে মামলা করেন।

হামলা ও মারধরের শিকার সাংবাদিকদের দাবি, আসামিরা সবাই এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তবে পুলিশ বলছে, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পাঁচবিবি থানায় সাংবাদিক মো. জুয়েল শেখের মামলায় ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসানসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর গতকাল রোববার সকালে ফিচকাঘাট পীরপাল এলাকার বাসিন্দা রায়হান চৌধুরী বাদী হয়ে পাল্টা মামলা করেছেন। এ মামলায় হামলা ও মারধরের শিকার চার সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে আজ সোমবার সকালে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

হামলা ও মারধরের শিকার সাংবাদিকেরা হলেন মাছরাঙা টেলিভিশনের জেলা সংবাদদাতা আল মামুন (৩৫), দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের জেলা প্রতিনিধি জুয়েল শেখ (৩৮), বাংলার দূত-এর জেলা প্রতিনিধি আবদুর রাজ্জাক (৩৫) ও সংবাদ সারাবেলার পাঁচবিবি প্রতিনিধি বাবুল হোসেন (৩৭)।

সাংবাদিক জুয়েল শেখের মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাঁচবিবি উপজেলার ফিচকাঘাট পীরপাল এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জমিতে মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান আইন অমান্য করে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি খননের কাজ করছিলেন। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভুক্তভোগী লোকজনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে তাঁরা চারজন সাংবাদিক গত শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল ও তাঁর দলবল নিয়ে সেখানে আসেন। মাহমুদুল ও তাঁর সহযোগীরা লাঠিসোঁটা ও লোহার রড নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান ও বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় তাঁদের টাকাপয়সাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভির জেলা প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জমিতে জোর করে মাটি কাটা হচ্ছিল—এমন খবর পেয়ে শনিবার চার সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল ও তাঁর বাহিনীর সদস্যরা সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া চার সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছেন। বর্তমানে আহত ওই চার সাংবাদিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উল্টো হামলা ও মারধরের শিকার চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি সাংবাদিকদের মারপিটের ঘটনায় করা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেন।

আরও পড়ুন