নড়াইলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে বৈষম্যবিরোধী তিন নেতাকে শোকজ
নড়াইলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে দেওয়া চিঠিতে কেন তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংগঠনটির মুখপাত্র নুসরাত জাহান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
শোকজের নোটিশ পাওয়া তিন নেতা হলেন সংগঠনটির জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান (মেহেদী), আমিরুল ইসলাম ও সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম (মামুন)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৯ জুন নড়াইল জেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত ছিলেন জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান ও আমিরুল ইসলাম। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাঁদের কেন সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে না, তার যৌক্তিক কারণ আগামী সাত দিনের মধ্যে জানাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মামুনকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, আগামী সাত দিনের মধ্যে যৌক্তিক কারণ সংগঠনকে জানাতে হবে। একই সঙ্গে কারণ দর্শানোর আগপর্যন্ত তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।
নোটিশ পাওয়া আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘৯ জুন আমার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আর এখন আমাকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। আমি নিয়মানুযায়ী নোটিশের জবাব দেব।’
এ ব্যাপারে আমিরুল ইসলাম ও রাশেদুল ইসলাম বলেেন, ‘তাঁরা শোকজের জবাব দেবেন। নিজেদের মধ্যে যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে তা দ্রুত সমাধান হবে।’
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ৬ জুন সংগঠনের ফেসবুক পেজে জেলা প্রশাসকের উদ্দেশে একটি পোস্ট দেন সংগঠনটির যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান। পোস্টে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ছবি সংযুক্ত করে প্রশাসনকে শহীদ, আহত ও সাধারণ মানুষের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান। পোস্টটি পরে আরেক যুগ্ম সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম মুছে ফেলেন। এ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর ৮ জুন জ্যেষ্ঠ নেতারা মীমাংসার চেষ্টা করলেও তাঁরা সাড়া দেননি। পরদিন ৯ জুন নড়াইল শহরের পুরোনো বাস টার্মিনালে তাঁদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে দুই-তিনজন আহত হন।
সংগঠনটির জেলা শাখার সংগঠক মিনহাজুল ইসলাম বলেন, অদক্ষ-অথর্ব ও অযোগ্য ব্যক্তিরা সংগঠনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তাঁদের অবহেলার জন্য এত বড় অঘটন ঘটেছে। যাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন, তাঁদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আহত আবদুর রহমান একজন গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা। জুলাই–পরবর্তী প্রেক্ষাপটে পুনরায় তাঁর আহত হওয়ার ঘটনা সত্যিই হৃদয়বিদারক। একই সঙ্গে রাশেদুলসহ অন্যরাও আহত হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।