কিশোরগঞ্জে ২৫ দিন আগে নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতার লাশ মিলল নদীতে

ডুবুরির সহায়তায় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নরসুন্দা নদী থেকে ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলের ছবিপ্রথম আলো

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নরসুন্দা নদী থেকে ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়া (তুর্জয়)। ২৫ দিন আগে নিখোঁজ হন ওই নেতা। এ ঘটনায় করা মামলার আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহায়তায় পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

শহরের মুক্তমঞ্চের ওয়াচ টাওয়ারের পূর্ব পাশের সেতুর নিচে নরসুন্দা নদীতে লাশটি খুঁজে পাওয়া যায়। মোখলেছ উদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের কেওয়ারজুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।

নিহত মোখলেছ উদ্দিনের বড় ভাই আশরাফ আলী জানান, তিন মাস ধরে মোখলেছ কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া বউ বাজার এলাকার চুন্নু মিয়া নামে এক ব্যক্তির বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। জেলা আদালতে পেশকারের সহকারী হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন। গত ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে বন্ধু মিজান শেখের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়ে গুরুদয়াল কলেজের দিকে যান মোখলেছ। এর পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না।

ওই দিন রাতে হারুয়া এলাকায় কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মিজানের সঙ্গে মোখলেছকে দেখা যায়। পাওনা টাকা ও জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাঁকে হত্যার পর নদীতে মরদেহ গুম করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ মিঠামইনের কেওয়ারজুর ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের শেফুল শেখ (৬৫) এবং তাঁর তিন ছেলে মিজান শেখ (২৮), মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখকে (২১) হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থেকে গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা জানান যে ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিনকে হত্যা করে নরসুন্দা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতেই মরদেহ উদ্ধারে সোমবার থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। তাঁরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন। আসামিদের স্বীকারোক্তিতেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আসামিদের কাছ থেকে মোখলেছ উদ্দিনকে হত্যার ছোরাসহ অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত মোখলেছের বড় ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ১৬ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।

ওই মামলায় মিজানসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। পাওনা টাকা ও জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মোখলেছকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন আসামিরা।