দিনাজপুরে সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার নিরাপত্তা চেয়ে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

দিনাজপুরে সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতা মো. শাহীনের স্ত্রী আসমা উল হুসনা আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করেন। দুপুরে দিনাজপুর নিমতলা প্রেসক্লাবেছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতা মো. শাহীনের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর স্ত্রী আসমা উল হুসনা। একই সঙ্গে চাঁদাবাজি, অপহরণ, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার দুপুরে দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়ায় নিমতলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করেন আসমা উল হুসনা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অপহরণের অভিযোগকারী রিসাদ ইসলাম। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন মো. শাহীন।

লিখিত বক্তব্যে আসমা উল হুসনা বলেন, গত শুক্রবার দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সোহেল হোসেন ও ফরহাদ রহমান, ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুর রাজ্জাক ছাত্রদল সভাপতি রেজাউর রহমানসহ আরও কয়েকজন রাজারামপুর এলাকার বাসিন্দা সাঈদ ইসলাম, রিসাদ ইসলাম ও দেবেন তিরকীকে অপহরণ করে শেখপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলামের বাসায় আটকে রেখেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর স্বামী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহীন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেল আলী চৌধুরী, হেলাল উদ্দিনসহ আরও কয়েক তাঁদের উদ্ধার করতে যান।

ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর বখতিয়ার আহমেদ ও তাঁর অনুসারীরা বিএনপির অপর পক্ষের নেতাদের ওপর ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হন ছাত্রদল নেতা মো. শাহীন (৩৫), তাঁর ছেলে আহনাফ তাসীন (১৪), স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হেলালউদ্দিন, রাসেল আলী চৌধুরী লিমনসহ কয়েকজন।

আরও পড়ুন

আসমা উল হুসনা বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বর্তমানে আমার স্বামী দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে এবং ছেলে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে।’ এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে ও দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদকে জড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ কয়েকজনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে শুক্রবার সন্ধ্যায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক। পরে আবদুল খালেক ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে সেখানে বখতিয়ার আহমেদ ও মোস্তফা কামাল পক্ষের নেতা–কর্মীরা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। উভয় পক্ষের নেতাদের উপস্থিতে মারধরের ঘটনাও ঘটে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘জোরপূর্বক আমার বিরুদ্ধে দলের একটি পক্ষ মিথ্যা চাঁদাবাজির নাটক সাজিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগকারীদের ডেকে এনে কথা শুনছিলেন। এখানে অপহরণের বিষয়টি আরেকটি মিথ্যাচার। আহত শাহীনের স্ত্রী কখনো বলছেন, চাঁদাবাজি; কখনো বলছেন অপহরণ। তাহলে কোনটা ঠিক? কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আমার আবেদন, বিষয়টির সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। যদি আমি অভিযুক্ত হই, দলের বিচার মেনে নেব। যদি মিথ্যাচার প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’