ফেনীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, কনকনে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
ফেনীতে আজ রোববার চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আজ সকাল থেকেই কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মেলেনি সূর্যের। এতে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট বেড়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, ফেনীতে তিন দিন ধরে শীত জেঁকে বসেছে। শুক্রবার থেকে জেলাজুড়ে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত শুক্র ও গতকাল শনিবার বেলা একটার পর কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও আজ সারা দিন দেখা মেলেনি। আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন ও কুয়াশায় ঢাকা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, ফেনীতে আজ সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার ছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও শুক্রবার ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও কয়েক দিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে।
সকালের অন্য দিনের তুলনায় রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হননি। তবে রিকশাচালক, পরিবহনশ্রমিক, হকার, ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ শ্রমজীবী মানুষকে বের হতে হয়েছে জীবিকার তাগিদে। পর্যাপ্ত শীতের পোশাক না থাকায় শীতে কাবু হয়ে পড়েছিলেন অনেকে।
তীব্র শীতের কারণে শহরের লালপোল বেদেপল্লি, ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প, উত্তর সহদেবপুর রিকশাচালক ও দিনমজুর কলোনি, বনানীপাড়া বস্তি এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
উত্তর সহদেবপুর এলাকার রিকশাচালক রংপুরের ইদ্রিস আলী জানান, তীব্র শীতের কারণে রিকশা নিয়ে বের হলেও আশানুরূপ যাত্রী না পাওয়ায় আয় কমে গেছে। সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
লালপোল বেদেপল্লির বিবি আকলিমা বলেন, বেড়ার ঘরে পলিথিনের ছাউনিতে কোনোরকমে বসবাস করলেও তীব্র শীতে ভারী শীতবস্ত্র না থাকায় ঠান্ডায় বৃদ্ধ ও শিশুরা কষ্ট করছে।
শীতের কারণে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) রোকন উদ দৌলা বলেন, তীব্র ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। প্রতিদিন হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। হাসপাতালটি বহির্বিভাগে স্বাভাবিক সময়ে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী থাকলেও বর্তমানে তার দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। অন্তর্বিভাগে ৭০-৮০ জন রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকলেও বর্তমানে তা ১১৫-১২০–এ গিয়ে ঠেকেছে।