কয়রায় আট কেজি হরিণের মাংস জব্দ, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি
গহিন সুন্দরবনে আট কেজি হরিণের মাংসসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে কয়রা থানা-পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই দুজন হলেন প্রভাস মণ্ডল (৪৮) ও দেবদাস সানা (২০)। তাঁদের বাড়ি কয়রা উপজেলার হুদুবুনিয়া গ্রামে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কয়রা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হাওলাদার প্রথম আলোকে জানান, আজ ভোরের আলো ফোটার আগে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তিনি জানতে পারেন, সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে কয়রার হুদুবুনিয়া গ্রামের সড়কের ওপরে রেখে বিক্রি করছেন। এরপর কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে অভিযানে নেমে সেখান থেকে মাংসসহ দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেছেন। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন।
বিকেলে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি সাদা ব্যাগে হরিণের মাংস রাখা। আদালত ভবনের পেছনে গর্ত খুঁড়ছেন এক ব্যক্তি। পাশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাঁড়ানো। তাঁরা জানালেন, আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের আওতাধীন এলাকা থেকে ৪১১ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়েছে। এতে মামলা হয়েছে ৩০টি, আসামি হয়েছেন ৭২ জন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি কয়রা উপজেলায় ঘড়িলাল গ্রাম-সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদে যৌথ অভিযান চালিয়ে ৬২ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করেছে কোস্টগার্ড ও বন বিভাগ। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের খাশিটানা বন টহল ফাঁড়ির অভিযানে ৯০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়।
সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, লোকালয়ের পাশে ছোট একটি নদী পেরোলেই গহিন জঙ্গল। সুন্দরবনে যারা হরিণ শিকার করে, তারা মাছ ধরার জালের সঙ্গে দড়ি নিয়ে যায় বনে। বনের ভেতর বসে দড়ি দিয়ে তৈরি করে হরিণ ধরার ফাঁদ। তারপর হরিণের যাতায়াতের পথে দড়ির ফাঁদ পেতে রাখে। চলাচলের সময় হরিণ সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণ জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয়।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি এম ইমদাদুল হক বলেন, ‘একটি হরিণের ২৫ থেকে ৩০ কেজি মাংস হয়। আমরা মাত্র আট কেজি মাংস জব্দ করেছি। বাকি মাংসের ক্রেতা কারা, মূল শিকারি কারা, আমরা এগুলো বের করার চেষ্টা করছি। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে।’