সোনাগাজীতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ছয় পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

ফেনী জেলার মানচিত্র

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ছয়টি শূন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিয়োগের জন্য ১৬ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। পরে গতকাল সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

গতকাল সকালে নির্ধারিত সময়ে ৩০ জন প্রার্থী পরীক্ষা দিতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। পরে তাঁদের পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ডিজির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকায় বিশেষ কাজে থাকায় নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেননি। তাই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের প্রতিদ্বন্দ্বী এক শিক্ষক বলেন, শূন্য পদে যাঁদের নিয়োগ হবে, তাঁরা আগে থেকেই বিদ্যালয়ে কর্মরত। তাঁরা প্রধান শিক্ষককে বিভিন্নভাবে নিজেদের আয়ত্তে রেখেছেন।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুন বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, ল্যাব অপারেটর, নৈশপ্রহরী, আয়া, নিরাপত্তাকর্মী ও অফিস সহায়কের ছয়টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৯ জন, ল্যাব অপারেটর পদে ৪ জন, নৈশপ্রহরী পদে ৪ জন, আয়া পদে ৪ জন, নিরাপত্তাকর্মী পদে ৫ জন এবং অফিস সহায়ক পদে ৪ জন চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন।

বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন মোহামদ আলমগীর বলেন, সভাপতি অনুপস্থিত থাকায় এবং ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে বিতর্ক ওঠায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সভাপতি ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাজি না হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, ‘নিয়োগ কমিটি বা প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি জড়িত নই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে জেনেছি, ঘুষ লেনদেনসংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশের পর বিতর্ক ওঠায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছভাবে না হলে আরও বেশি বিতর্ক হবে।’