গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

শেরপুর জেলার মানচিত্র

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আমিনুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। গতকাল শনিবার ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজ নিলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী পরিবার, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট উপজেলার নন্নী উত্তরবন্দ গ্রামের চান মিয়া ও আফরোজা বেগমের ছেলে আকাশ তাঁর স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি বাইগরপাড়া গ্রামে যান। স্ত্রীকে না দেওয়ায় সেখানে (শ্বশুরবাড়ি) অস্বাভাবিক আচরণ ও হত্যার হুমকি দেন আকাশ।

এ সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন আকাশকে বেধড়ক মারধর করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। একপর্যায়ে ৯৯৯–এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে পুলিশ শ্বশুরবাড়ি থেকে আকাশকে থানায় নিয়ে আসে।

কোনো অভিযোগ বা বাদী না থাকায় রাতেই স্থানীয়দের সুপারিশে পুলিশ আকাশকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ইউপি সদস্য আমিনুল এই সুযোগে আকাশকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে এনে মারধরের ভয় দেখান। পরে আকাশের বাবার কাছে ফোন করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন ওই ইউপি সদস্য।

এতে বিকাশে একাধিক নম্বর থেকে তাঁর কাছে ৩ দফায় মোট ১৫ হাজার টাকা দেন আকাশের বাবা চান মিয়া। এরপর আকাশের মা–বাবাকে ইউপি সদস্য আবারও টাকা চেয়ে চাপ দেন। পুলিশকে আরও টাকা দিতে হবে বলে ২ দফায় আরও ৮ হাজার টাকাসহ মোট ২৩ হাজার টাকা নেন তিনি। নন্নী বাজারের বিকাশের দোকানদার মোবারকের মাধ্যমে বেশির ভাগ লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে এনে মারধরের ভয় দেখিয়ে ইউপি সদস্য আমিনুলের ২৫ হাজার টাকা দাবি করা ও বিকাশে টাকা নেওয়ার একাধিক কল রেকর্ড পাওয়া গেছে।

এদিকে ইউপি সদস্য আমিনুল তাঁর দাবি অনুযায়ী আরও দুই হাজার টাকার জন্য একের পর এক চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে ভুক্তভোগী আকাশের বাইসাইকেলটিও আটকে রাখেন ইউপি সদস্য আমিনুল।

আকাশের মা আফরোজা বেগম বলেন, ‘মেম্বারকে দেওয়া ২৩ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা সোনার গয়না বন্ধক রেখে মাসে দেড় হাজার টাকা সুদে আনছিলাম। আমরা মেম্বারের বিচার চাই।’

আকাশের বাবা চান মিয়া বলেন, ‘আমি ঢাকায় কাজ করি। আমিনুল ভয় দেখাইয়া আমারে আনাইছে। ধারদেনা কইরা তারে টাকা দেওয়া লাগছে।’

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে ইউপি সদস্য আমিনুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে নন্নী ইউপির চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা আছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।’

ইউএনও খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, ‘অভিযোগটি আমি এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’