কালীগঞ্জে পাঁচ দফা দাবিতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন ম্যাটসের শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতায়ছবি: সংগৃহীত

স্থায়ী শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ চালু করা, আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে (ম্যাটস)। আজ রোববার সকালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতায় সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এর আগে তাঁরা সেখানে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন।

সড়ক অবরোধ করলে নলতায় ম্যাটসের সামনের দুই পাশে সড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে যানজট তৈরি হয়। পরে ঢাকা থেকে লাউড স্পিকারে মুঠোফোনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ফ ম রুহুল হকের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

ম্যাটসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আমিত হাসান ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার জানান, তাঁরা ভর্তি হওয়ার পর থেকে সপ্তাহে ১ থেকে ৩ দিনের বেশি ক্লাস হয় না। হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার ল্যাব, মেডিকেল লাইব্রেরি, মেডিকেল মিউজিয়ামসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় না। এ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে তাঁরা কিছু শিখতে পারছেন না, ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।

ম্যাটসের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম, তাহমিনা জাহান ও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে পড়ালেখা করে কিছু শিখতে পারছেন না। সনদ নিয়ে কাউকে সেবা দিতে পারবেন না। তবে এ শিক্ষার দরকার কী? অবিলম্বে তাঁদের দেওয়া পাঁচ দফা না বস্তবায়ন করলে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

ম্যাটস কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের প্রচেষ্টায় ২০১৩ সালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতায় মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ছাত্রছাত্রী ভর্তি শুরু হয় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে। ছাত্রাবাসের জন্য ১৮টি শয্যা ও ছাত্রীনিবাসের জন্য ৩৬টি শয্যা নিয়ে ম্যাটস যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে তিন ব্যাচে ১৫৬ জন শিক্ষার্থী আছেন। শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানটি অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সব মিলিয়ে তিনিজন অতিথি শিক্ষক আছেন। এর মধ্যে একজন অধ্যক্ষের অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। তিনি সপ্তাহে এক অথবা দুই দিন আসেন। প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী পদ ফাঁকা।

ম্যাটসের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইদ্রিস মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যুক্তিযুক্ত। তাঁরা ঠিকমতো ক্লাস নিতে পারেন না। ১৫ জন শিক্ষকের পরিবর্তে আছেন মাত্র তিনজন অতিথি শিক্ষক। এভাবে প্রতিষ্ঠান চলা কঠিন। তাঁদের যুক্তিযুক্ত দাবির সঙ্গে তিনিও একমত।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য রুহুল হক বলেন, আন্দোলন হতে হবে নিয়মতান্ত্রিক। সড়ক অবরোধ করে মানুষকে কষ্ট দিয়ে আন্দোলন করা যাবে না। বিষয়টি জাতীয় সমস্যা। তিনি সাতক্ষীরার ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের বিষয় স্বরাষ্ট্রসচিব ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কথা বলেছেন। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।