ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের কক্ষে ঢুকে ছাত্রদলের ভাঙচুর, পদ ছাড়তে হুমকি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার অফিস ভাঙচুর। হতবিহ্বল হয়ে বসে আছেন রেজিস্ট্রার। আজ শনিবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার অফিসে ভাঙচুর ও পদ ছাড়তে রেজিস্ট্রারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাঁরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং অর্থ ও হিসাব শাখার বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েও হুমকি এবং দরজা-জানালায় আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে উপাচার্যের কাছে ৯ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান তাঁর অফিসে নাশতা করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ, সদস্যসচিব মাসুদ রুমী, যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজসহ ১০-১২ জন নেতা-কর্মী তাঁর কক্ষে যান। তাঁরা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং পরবর্তী দিন থেকে অফিসে না আসার জন্য হুমকি দেন। পরে তাঁরা টেবিলের ওপর থাকা নাশতার কাপ-পিরিচ ভেঙে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা আরও জানান, রেজিস্ট্রার কার্যালয় ছাড়াও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, অর্থ ও হিসাব শাখার কিছু দপ্তরে গিয়ে হুমকি ও দরজা-জানালায় আঘাত করেন। এ ছাড়া তাঁরা রেজিস্ট্রারের সহধর্মিণী অর্থ ও হিসাব শাখার উপহিসাব পরিচালক রুবিনা আক্তারের কার্যালয়ের চেয়ারটি টেবিলের ওপর তুলে রেখে যান। তবে এ সময় রুবিনা আক্তার অফিসে ছিলেন না। শাখা ছাত্রদলের সাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বে এসব ভাঙচুর ও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা রেজিস্ট্রারের টেবিলের ওপর থাকা নাশতার কাপ-পিরিচগুলো ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। আজ সকালে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রেজিস্ট্রারের কক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

বিভিন্ন অফিসে ভাঙচুর ও হুমকি প্রদান শেষে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা স্বৈরাচারের দোসরদের অপসারণসহ ৯ দফা দাবি নিয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘১০-১২ জন হঠাৎ রুমে প্রবেশ করে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় বলে, “তুই এখনো এখানে বসে আছিস কেন? কালকেই রিজাইন দিবি। এখান থেকে সরে যাবি। না হলে পরিণতি আরও খারাপ হবে।” পরে তারা কাপ-পিরিচগুলো ভেঙে চলে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কাউকে চিনতে পারিনি। আগে কখনো দেখিনি। সাত থেকে আট মিনিট ছিল। ঘটনার পর বিষয়টি উপাচার্যকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন বিষয়টি দেখবেন। এ ছাড়া কার্যালয় প্রক্টর পরিদর্শন করেছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড স্টোর শাখার উপরেজিস্ট্রার মীর মো. মোর্শেদুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী আমার রুমের সামনে এসে চেঁচামেচি করেছে এবং আমাকে শাসিয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে সদস্যসচিব মাসুদ রুমী ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আমরা রেজিস্ট্রারের অফিসে গিয়েছিলাম। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছি, আওয়ামী দোসর হিসেবে কীভাবে এখনো পদে বহাল থাকে? আমরা ভাঙচুর করিনি। আমাদের আহ্বায়কসহ সবাই ছিল সেখানে।’

এ বিষয়ে জানতে প্রক্টর শাহীনুজ্জামানকে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি।