পচা গন্ধের সন্ধান করতে গিয়ে মিলল নিখোঁজ যুবকের বস্তাবন্দী লাশ
ময়মনসিংহের নান্দাইলে নিখোঁজের তিন দিন পর মো. আলমগীর হোসেন (২৮) নামের এক সৌদি আরবফেরত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পচা গন্ধের সন্ধান করতে গিয়ে ওই যুবকের মরদেহের সন্ধান পান স্থানীয় বাসিন্দারা। লাশটি বস্তাবন্দী করে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
নিহত মো. আলমগীর হোসেন নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে সংগ্রামখেলী বাজারের পাশে বাঁশের ঝোপ থেকে বস্তাবন্দী লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আলমগীর হোসেন সৌদি আরবে থাকতেন। তিন বছর আগে দেশে ফেরেন। এরপর এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। এলাকায় কিছু ব্যক্তি মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় এর প্রতিবাদ করতেন আলমগীর। এ নিয়ে মাদক কারবারিদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলমগীর হোসেনের ঝগড়া হয়। গত সপ্তাহেও আলমগীর হোসেনের সঙ্গে বাক্বিতণ্ডা হয় কয়েকজনের। পরে গত বুধবার রাতে আলমগীর হোসেন নিখোঁজ হলে অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেনের মা আনোয়ার বেগম গত রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
কোথাও আলমগীর হোসেনের সন্ধান মিলছিল না। এর মধ্যে আজ বেলা দুইটার দিকে শেরপুর ইউনিয়নের সংগ্রামখেলী মধ্য বাজারের বাঁশের ঝোপ থেকে পচা গন্ধ বের হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন এগিয়ে পুঁতে রাখা বস্তাবন্দী মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় প্লাস্টিকের বস্তায় পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার হয়।
নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই শাহীন মিয়া জানান, ‘বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। পরে প্রচণ্ড গরমে পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে ঝোপে গিয়ে দেখা যায়, শিয়ালে একটি গর্তের মাটি সরিয়ে রেখেছে। গর্তের ভেতরে আলামগীরের বস্তাবন্দী মরদেহ পাওয়া যায়।’
আলমগীরের ভাবি সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার দেবর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সাইদুল, সাদেক, মাসুদ, রিপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই। মরদেহ উদ্ধার হওয়ার খবরে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার আজ বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বস্তাবন্দী করে মাটি চাপা দেওয়া দেখে মনে হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এখন পরিবারের লোকজন নিয়ে মরদেহটি উদ্ধারে কাজ করছি। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।’