আচরণবিধি ভাঙেননি, শোকজের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
ফাইল ছবি

মেহেরপুর-১ (মেহেরপুর সদর-মুজিবনগর উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের হয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণ দর্শানো নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন তাঁর দুই প্রতিনিধি।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আসনটির নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেনের খাসকামরায় লিখিত ও মৌখিকভাবে নোটিশের জবাব দেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

ফরহাদ হোসেনের পক্ষে যাঁরা জবাব দিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহিন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবলু বিশ্বাস। পরে তাঁরা সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁদের প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি।

গত রোববার ফরহাদ হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছিল জেলার নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। নোটিশে বলা হয়েছিল, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী গত শনিবার মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজার বাসভবনের সামনে নির্বাচনী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় তিনি সরকারি গাড়ি ও পুলিশ প্রটোকল নিয়ে উপস্থিত হন, যা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর বিধি ১২ ও ১৪ (২)-এর লঙ্ঘন।

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধির ১২ ধারায় বলা আছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এর আগে ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ নেই। আর ১৪ ধারার ২–এ বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাঁর সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড যোগ করতে পারবেন না।

নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের প্রতিনিধি ইব্রাহিম শাহিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি শোকজের জবাবে বলা হয়েছে, গত শনিবার সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজার বাসভবনের সামনে কোনো প্রকারের নির্বাচনী প্রচারণা করা হয়নি। সেখানে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়নি।’

নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিকে ভবিষ্যতে নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইব্রাহিম শাহিন। ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, শনিবার কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে তাঁর গ্রামের বাড়িতে দেখতে যান প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ ফরহাদ হোসেনকে দেখতে ভিড় জমান। সেখানে কোনো প্রকার জনসভা বা নির্বাচনী প্রচারণা করা হয়নি। প্রতিমন্ত্রী তাঁর প্রটোকল ব্যবহার করেছিলেন অসুস্থ সেলিম রেজাকে দেখে সেখান থেকে যশোর বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য।

ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর–১ আসনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর তাঁকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন এবং জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বাবুল জাম, জাকের পার্টির সাইদুল আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির তরিকুল ইসলাম।