বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পাঁচ দিন পর মারা গেলেন কনস্টেবল সোহাগ

সাতক্ষীরা সদর থানার কনস্টেবল সোহাগ আলী
ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুতায়িত হয়ে পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাতক্ষীরা সদর থানার কনস্টেবল সোহাগ আলী। রোববার ভোররাতে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তবে কীভাবে সোহাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছিলেন, এর সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ।

কনস্টেবল সোহাগ আলী (৩৩) চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিরউদ্দিনের ছেলে। এক সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন তিনি। তাঁর ছোট ভাই মাসুদুর রহমানও পুলিশ কনস্টেবল। তিনি যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন একটি ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।

সোহাগের ছোট ভাই মাসুদুর রহমান জানান, তিনি জানতে পারেন, তাঁর বড় ভাই সাতক্ষীরা সদর থানার কনস্টেবল সোহাগ আলী বিদ্যুতায়িত হয়েছেন। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাঁকে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার ভোরে চিকিৎসকেরা তাঁকে (সোহাগ আলী) মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মরদেহ প্রথমে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহাফুজ আলম জানান, ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে দৌড়ে জরুরি বিভাগে আসেন সোহাগ নামের পুলিশের এক কনস্টেবল। তাঁর শার্ট-প্যান্টের পাশাপাশি সারা শরীর পুড়ে চামড়া উঠে গিয়েছিল। শিরাগুলো কালো হয়ে পড়েছিল। নিজেকে ওই ব্যক্তি সাতক্ষীরা সদর থানার কনস্টেবল পরিচয় দেন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানাকে অবহিত করা হলে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় আসেন। রাতেই তাঁকে ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শমিনুল হক সোহাগ আলীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কনস্টেবল সোহাগ আলী ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মধুমোল্লারডাঙ্গীতে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার জন্য থানা থেকে বের হয়ে যান। রাত একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয়, সোহাগ বিদ্যুতায়িত হয়ে হাসপাতালে আছেন। তবে সোহাগ কথা বলতে না পারায় তাঁর বিদ্যুতায়িত হওয়ার আসল কারণ জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রোববার সন্ধা সাতটা পর্যন্ত সোহাগের মরদেহ সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে পৌঁছায়নি।