খুলনায় তল্লাশির নামে বাড়ি তছনছের অভিযোগ চিকিৎসক নেতার

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে তল্লাশির নামে বাড়ি নছনছ করার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএমএ খুলনা জেলা সভাপতি শেখ বাহারুল আলম। আজ খুলনা বিএমএ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে
ছবি: প্রথম আলো

বাড়িতে অস্ত্র আছে, এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা জেলার সভাপতি শেখ বাহারুল আলমের বাড়ি তল্লাশি করেছে যৌথ বাহিনী। বাহারুলের অভিযোগ, তল্লাশির নামে তাঁর বাড়ি ও হাসপাতাল তছনছ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে বাহারুল এ অভিযোগ করেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে খুলনা বিএমএ ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাহারুল বলেন, তাঁর বাড়ি নগরের সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার কেডিএ অ্যাপ্রোচ সড়কে। বাড়ির নিচতলায় ট্রমা সেন্টার নামে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে। ওপরের তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। গতকাল সোমবার বিকেল চারটার দিকে তাঁর বাড়িতে ‘বিশেষ বাহিনী’ ও পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে।

চিকিৎসক বাহারুলের দাবি, যাঁরা তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে কি না। তখন অভিযানকারীরা বলেছেন, তথ্য আছে, তাঁর বাড়িতে অস্ত্র আছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ওই বাহিনীর সদস্যরা এসেছেন। এরপর তিনি বাড়ি ও হাসপাতালের সবকিছু খুলে দেন। পরে সবকিছু তছনছ করে তল্লাশি করা হয়, কিন্তু কিছুই পাননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা অভিযানের পর একটি কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়, যাতে লেখা ছিল, কিছুই পাওয়া যায়নি।

এই অভিযানে সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি বাহারুলের। তাঁর ভাষ্য, যে ব্যক্তির তথ্যানুযায়ী বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র উদ্ধারে এসেছিলেন, সেই ব্যক্তির তথ্য নিশ্চয় বাহিনীর সদস্যদের কাছে আছে। তথ্য দেওয়া ব্যক্তিকে সবার সামনে হাজির করা ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য শাস্তি দাবি করেন বাহারুল।

৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে জানান বাহারুল আলম। নাগরিক নেতা হিসেবে খুলনা শহরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলেন বলে জানান। বাহারুল বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও দলের সমালোচনা করতেও কখনো তিনি ভয় পাননি। এমনকি ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের পরও তাঁকে কোনো প্রকার ভয়ভীতি বা হামলা করা হয়নি। কারণ, সাধারণ মানুষের কথাই সব সময় বলেছেন। শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের সময় তাঁদের সমর্থনে বিএমএ ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। তিনি কখনো অস্ত্র রাখার প্রয়োজন মনে করেননি, এমনকি তাঁর কোনো অস্ত্রের লাইসেন্সও নেই।

বাহারুল বলেন, ‘এই রাষ্ট্র তো আমাদের নাগরিকদের। সমাজের পেশাজীবীদের, সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলি, এটাই কী আমার অপরাধ? আক্ষেপ একটাই, আমার বাড়ি যদি এমন হতে পারে, তাহলে অন্যের বাড়ি কীভাবে নিগৃহীত হচ্ছে, সেটা সহজে অনুমান করা যায়।’

বাহারুলের বাড়িতে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক বাহারুলের বাড়িতে নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করেছেন। ওই অভিযানে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা।