বাধা পেরিয়ে ময়মনসিংহের সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা

বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাসমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে অনুমতি পাওয়া মঠে আগেই এসে রাত্রি যাপন করেছেন দলটির অনেক নেতা–কর্মী। আজ শনিবার ভোরে ময়মনসিংহ নগরের পলিটেকনিক মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হুমকি-বাধা, লাঠি নিয়ে সড়কে অবস্থান ও  যানবাহন থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরও ময়মনসিংহের সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনাকীর্ণ হয়ে উঠছে সমাবেশস্থল ময়মনসিংহের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠ। স্লোগান, মিছিল আর বাদ্যের তালে তালে মুখরিতে হয়ে উঠছে পুরো এলাকা।

আজ শনিবার দুপুরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বৃহত্তর ময়মনসিংহের চার জেলা ও আশপাশের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। কিন্তু সরকার দলীয় লোকজন বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে সমাবেশে আসতে না পারেন, এ জন্য বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি সড়কে লাঠি নিয়ে অবস্থান করে সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজনকে বাধা দিতে থাকেন। কিন্তু এসব বাধা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এর মাঝে দুপুর দুইটার দিকে জনাকীর্ণ হয়ে উঠে পুরো মাঠ।

সরেজমিনে দেখা যায়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠ ও তার আশপাশের সড়কে ব্যাপক জনসমাগম হয়েছে। তাঁরা সবাই বিএনপির কর্মী-সমর্থক। কেউ এসেছেন জামালপুর থেকে, কেউ শেরপুর, কেউ নেত্রকোনাসহ দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন। তাঁদের কারও হাতে ধানের শীষ, কারও হাতে ব্যানার-পোস্টার, কেউবা আবার নাচছেন বাদ্যের তালে। তাঁদের পদচারণে গমগম করছে পুরো এলাকা।

লাঠি হাতে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা। আজ শনিবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে আসা মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনিসহ আরও ৪ জন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সকাল নয়টার দিকে সমাবেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ভালুকা বাজারে আসতেই স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী তাঁদের পথ আটকে ধরেন। অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দেন।। এরপর তাঁরা চারজনই পৃথকভাবে মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানে চড়ে এসেছেন সমাবেশস্থলে।

আমিনুল বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের বাধা দেয়। সমাবেশে না যেতে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। কিন্তু আমরা থামি নাই। বিভিন্নভাবে ভেঙে ভেঙে আসছি।’

বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত সমাবেশে থাকতে পারছেন এতেই আনন্দিত মো. হায়দার আলী। একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে খেতে হায়দার আলী বলেন, তিনি আগে থেকেই জানতেন, সরকার দলের লোকজন সমাবেশ ঠেকাতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তাই তিনি ও তাঁর বন্ধু নাদির আলী আগের দিন (শুক্রবার) সন্ধ্যায় চলে আসেন ময়মনসিংহ শহরে। এরপর রাতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে ঘুমিয়ে সকালে সমাবেশে যোগ দেন। হায়দার বলেন, ‘সমাবেশে প্রচুর লোকজন। এটা দেখেই খুব ভালো লাগছে। কষ্ট হলেও সমাবেশে অংশ নিতে পারছি এটাই আনন্দের।’