কারও প্রচার গানে গানে, কেউ ব্যতিক্রমী সাজে

গানে গানে ভোট চান সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী তানজির রহমান। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশনেছবি: জুয়েল শীল

স্টেশনে শিক্ষার্থীদের জটলা। এক কোণে দাঁড়িয়ে গানে গানে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন এক প্রার্থী। গিটারে সুর তুলছিলেন আরেক শিক্ষার্থী। হাততালি পড়ছিল ক্ষণে ক্ষণে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখা গেল এ দৃশ্য।

বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে এখন ক্যাম্পাসে এমনই উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রচারণার জোয়ারে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে নতুন কিছু। গত মঙ্গলবার ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরার মাধ্যমে প্রচারণা দেখা গিয়েছিল।

গানে গানে প্রচার চালানো প্রার্থীর নাম তানজির রহমান। তিনি চাকসুর সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী। প্রচারণার এক ফাঁকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে ক্যাম্পাসে সংস্কৃতিচর্চা ছড়িয়ে দেবেন। সাহিত্যের আসর বসাবেন। নিয়মিত প্রকাশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবেন। এ ছাড়া সংগীতের সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনি গানে গানেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গান ছাড়াও দেখা গেল বর সেজে প্রচারপত্র বিলি করছিলেন এক শিক্ষার্থী। ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শিমুল হোসেনকে দেখা গেছে এই অন্য রকম রূপে। অবশ্য তিনি প্রার্থী নন। ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও দপ্তর সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. হাবিবুর রহমানের পক্ষে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। শিমুল বলেন, তিনি বিভাগের অনুষ্ঠানগুলোতে অভিনয় করেছেন। প্রার্থী তাঁর পরিচিত বড় ভাই। তাই তাঁর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। একটু ব্যতিক্রমী সাজে শিক্ষার্থীদের সাড়া মিলছে বেশি।

বর সেজে এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালান ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শিমুল হোসেন। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশনে
ছবি: প্রথম আলো

১৫ অক্টোবর চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভোটার প্রায় ২৭ হাজার। প্রার্থী হয়েছেন ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী। নির্বাচনে লড়ছে ১৩টি প্যানেল। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রচারণা। দিন-রাত ক্যাম্পাসের রেলস্টেশন থেকে ঝুপড়ি—সব জায়গায় প্রার্থীরা হাজির হচ্ছেন। ভোট ও দোয়া চাইছেন।

চাকসু নির্বাচনের প্রচারে এসব নতুন ধারার উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে। লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ রাথ চন্দ্র বলেন, নির্বাচনের একদম শেষ মুহূর্তে এমন ভিন্নধর্মী প্রচার দেখে ভালো লাগছে। অনেক দিন পর মনে হচ্ছে চাকসু নির্বাচন সত্যিই উৎসবে পরিণত হয়েছে।

প্রচলিত প্রচারপত্র, ব্যানার, পোস্টারের বাইরে গিয়ে এখন প্রার্থীরা নিজেদের ভাবনা, সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। ফলে প্রচারণার মাঠে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আনন্দ-উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।