হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে ভাতিজার মনোনয়ন বাতিলের দাবি চাচার

ভাতিজার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে চাচার সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট শহরের একটি রেস্তোরাঁয়ছবি: প্রথম আলো

হলফনামায় তথ্য গোপন করার অভিযোগে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুজ্জামান আহমেদের মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবি জানিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থী। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় লালমনিরহাট শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুজ্জামান আহমেদ এ দাবি জানান।

রাকিবুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী মো. নূরুজ্জামান আহমেদের ছেলে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে অভিযোগকারী মাহবুবুজ্জামান আহমেদ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও রাকিবুজ্জামানের চাচা। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। আগামী ২১ মে কালীগঞ্জে নির্বাচন হবে।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুজ্জামান আহমেদ দাবি করেন, রাকিবুজ্জামান আহমেদ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় জমি ক্রয় ও সরকারি কলেজে প্রভাষক থাকার সময় নেওয়া বেতনের তথ্য গোপন করেছেন, যা পরিপত্র (৭) এর ৪ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দাখিল করা প্রমাণ ও তথ্যাদি অনুযায়ী রাকিবুজ্জামানের মোট জমির পরিমাণ ৪২ দশমিক ২৩ একর। কিন্তু তিনি হলফনামায় ১৬ দশমিক ৬৫ একর জমির বিবরণ দিয়েছেন। বাকি জমির তথ্য উল্লেখ করেননি। তিনি ১ বছরের কলেজের প্রভাষক থাকতে বেতন–ভাতা বাবদ ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৪ টাকা উত্তোলন করেছেন, যা হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এসব তথ্য গোপন করা সুনির্দিষ্ট অপরাধ হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিলের লিখিত আবেদন করেন তিনি।

তবে অভিযোগের বিষয় রাকিবুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘আমি আমার দাখিল করা আয়কর বিবরণী অনুযায়ী হলফনামায় তথ্য–উপাত্ত সংযুক্ত করেছি। আমি কালীগঞ্জ কেইউপি সরকারি কলেজের প্রভাষক পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছি, যা মাউশি থেকে অনুমোদিত হয়েছে।’ জমির ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে সবার সামনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাকিবুজ্জামানের নামে ২২টি দলিলের ফটোকপি দাখিল করেছি। উত্তোলিত দলিল প্রদর্শন করেছি। সর্বশেষ প্রভাষক পদে রাকিবুজ্জামানের বেতন উত্তোলনের কপি দাখিল করেছি। এরপরও ন্যায়বিচার পেলাম না।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দুজনের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাঁদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করার সুযোগ ও অধিকার আছে।