যশোরে আওয়ামী লীগের ৬৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
যশোরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৬৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যশোর জেলা বিএনপির সাবেক সহ–আইনবিষয়ক সম্পাদক এম এ গফুর বাদী হয়ে গতকাল রোববার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নাম রয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট আসামিরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে একত্র হন। এরপর তাঁরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে শহরের লালদিঘীরপাড়ের বিএনপির কার্যালয়ের সামনে যান এবং তাঁরা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। এ সময় দুটি ল্যাপটপ, আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করা হয়। পরে প্রয়োজনীয় আসবাব ভাঙচুর ও তছনছ করে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেন। আসামিরা ৪০ মিনিট তাণ্ডব চালান।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান, জেলা যুবলীগের নেতা মঈন উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, লেবুতলা ইউপির চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান, নরেন্দ্রপুর ইউপির চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ, রামনগর ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান, যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর কবির, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেদ হোসেন প্রমুখ।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০–১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মীরা বলেন, ৪ আগস্ট শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যশোর শহরে দুটি পৃথক মিছিল বের করা হয়। কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারীদের মিছিলটি লালদিঘীপাড়ের দিকে যায়। পরে সাবেক সংসদ সদস্য নাবিলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে লোকজন বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। কিন্তু মামলার এজাহারে শাহীন চাকলাদারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান, কাউন্সিলর আলমগীর কবিরসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে। যাঁরা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ওই মিছিলে ছিলেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আমরা আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপ দেখতে যাইনি। তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে নাম এসেছে। আমরা তো ওই সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে আমাদের পরিষ্কার নির্দেশনা আছে, নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে কোনো মামলায় আসামি করা যাবে না।’