নবীনগরে পূর্বশত্রুতার জেরে বিয়েবাড়িতে হামলা, বাবা-ছেলেসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ

ছররা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেছবি সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বিয়েবাড়িতে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় বাবা-ছেলেসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি পশ্চিমপাড়া গ্রামের খলিল মিয়া (৫৫), তাঁর ভাই অলিল মিয়া (৫০), অলিলের ছেলে মো. হাসিব (২৫), খলিল ও অলিলের ভাগনে নাফিস আহমেদ (১৯)। তাঁদের শরীরে ছররা গুলি লেগেছে। খলিল, অলিল ও তাঁর ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় গতকাল আহত অলিল মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম মনেকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ওই বাড়িতে হামলা করেছেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়িকান্দি এলাকার মনেক মিয়ার সঙ্গে খলিল মিয়ার পরিবারের বিরোধ চলে আসছে। গত রোববার রাতে অলিলের ছেলে সাইফ ইমরানের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান চলছিল। তখন এলাকার একটি মসজিদ থেকে ব্যাটারি চুরির অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়। ওই দুজন মনেকপক্ষের। স্থানীয় লোকজন তাঁদের বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। একপর্যায়ে ওই দুজন জানান, তাঁরা পাশের বাড়ির মালন মিয়ার ছেলে হৃদয়ের কাছ থেকে ইয়াবা কেনেন। পরে লোকজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে।

এরপর গতকাল সকালে হৃদয় ও মনেক মিয়ার লোকজনের সঙ্গে অলিল মিয়ার লোকজনের বাক্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনেক মিয়া, হৃদয়ের বাবা মালন ও মনেক মিয়ার লোকজন অলিল মিয়া ও তাঁদের পরিবারের ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। এতে খলিল, অলিল, তাঁর ছোট ভাই অলিল মিয়া, অলিলের ছেলে হাসিব ও ভাগনে নাফিস গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে অলিল ও নাফিসকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অন্যদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। অবস্থার অবনতি হলে খলিল, অলিল ও তাঁর ছেলে হাসিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কিশলয় সাহা প্রথম আলোকে বলেন, নাফিস নামের একজনের পিঠ, বাঁ পা ও বাঁ হাতের একটি আঙুলে ছররা গুলি লেগেছে। অলিল মিয়ার ঊরু, হাঁটুসহ শরীরের কয়েকটি জায়গায় ছররা গুলি লেগেছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত ব্যক্তিদের স্বজন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের হাবিলদার নাসির উদ্দিন গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে বলেন, চুরির ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় মনেক ও তাঁর লোকজন বিয়েবাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। তাঁরা গুলি করে বাড়িঘর ভাঙচুর করেছেন। বর্তমানে তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।