চার দিন ধরে অভিবাসন কেন্দ্রের সার্ভার বিকল, যাত্রী পারাপারে ভোগান্তি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্র
ছবি: প্রথম আলো

চার দিন ধরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্রের সার্ভার বিকল হয়ে আছে। এতে ম্যানুয়ালভাবে তথ্য যাচাই করে যাত্রী পারাপার করতে দীর্ঘ সময় লাগছে।

সার্ভার বিকল থাকায় চিকিৎসা ও ভ্রমণের কাজে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে দু-এক দিনের মধ্যে সার্ভারের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্থলবন্দর পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্র সূত্র জানায়, পাসপোর্টধারী যাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে অনলাইন সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে। বিদেশে গমনেচ্ছু ও আগমনকারী ব্যক্তিদের তথ্যের সত্যতা যাচাই করে পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সার্ভারে গমনাগমনের তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। এরপর সার্ভারে সংযুক্ত ক্যামেরায় ছবি তুলে ব্যক্তিকে যাচাই করেন এবং সিল-সই দিয়ে যাতায়াতের অনুমতি দেন। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এসব নিয়ন্ত্রণ করে।

সূত্র জানায়, গত শনিবার সকালে সার্ভারে কাজ করতে গিয়ে কর্মকর্তারা খেয়াল করেন, সার্ভারে তথ্য লিপিবদ্ধ করা যাচ্ছে না। পুলিশের বিশেষ শাখার মাধ্যমে বিষয়টি ঢাকায় পুলিশ অভিবাসন ও পাসপোর্ট বিভাগের প্রকৌশলীদের জানানো হয়। বুড়িমারী স্থলবন্দর পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্রে সংযুক্ত কম্পিউটারে সমস্যা থাকায় সার্ভার কাজ করছে না বলে তাঁরা জানান। ওই দিনই কম্পিউটারটি ঢাকায় পাঠানো হয়। অন্যদিকে এসবির অনুমতি সাপেক্ষে ম্যানুয়ালভাবে পাসপোর্টের নম্বর ও তথ্য নোট নিয়ে যাত্রীদের পারাপার করা হয়। কিন্তু ধীরগতির কারণে যাত্রীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দর পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্রে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের অনেক ভিড়। পুলিশের কয়েকজন সদস্য যাত্রীদের পাসপোর্ট নিয়ে রেজিস্টার খাতায় লিখে সিল দিয়ে পারাপারের অনুমতি দিচ্ছেন। এতে উভয় দেশে যাত্রী পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে।

ভারতের চ্যাংড়াবান্দা স্থলবন্দর থেকে আসা যাত্রী গিজেন্দ্রনাথ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরের দিকে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে এসেছি। এখানকার সার্ভারে কাজ করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য বিকেল পর্যন্ত বসে আছি। কখন হবে জানি না।’ একই এলাকার রাখাল অধিকারী বলেন, ‘ভারতের চ্যাংড়াবান্দা ইমিগ্রেশনে সমস্যা হয়নি। এখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে আছি।’

রংপুরের আলমনগরের এক বাসিন্দা তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে এসেছেন। সার্ভারের সমস্যার জন্য কাজ হচ্ছে না। তথ্য কোথাও পাঠানো হয়েছে, এখনো আসেনি। অসুস্থ শরীর নিয়ে অপেক্ষা করছেন।

বুড়িমারী স্থলবন্দর পুলিশ অভিবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মুর হাসান কবির প্রথম আলোকে বলেন, চার দিন ধরে সার্ভার বিকল থাকায় ঢাকা বিমানবন্দর অভিবাসন পুলিশসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরের সার্ভারে তথ্য পাঠানোর পর অনুমতি পেলে উভয় দেশের যাত্রীদের তথ্য হাতে লিখে পারাপারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা থাকা কম্পিউটারটি ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে নতুন সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে। ঢাকা অভিবাসন পুলিশ কম্পিউটারটি হাতে পেয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে সার্ভারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিকেল চারটা পর্যন্ত দুই শতাধিক যাত্রী পারাপারের অনুমতি পেয়েছেন।