ঝড় ও বজ্রপাতে ৭ জেলায় ১২ মৃত্যু

কালবৈশাখীর আঘাতে সড়কের ওপর ভেঙে পড়েছে গাছ। এতে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। গতকাল সকালে পিরোজপুরে সদর উপজেলার ডুমুরিতলা সড়কেছবি: প্রথম আলো

ঝড় ও বজ্রপাতে দেশের সাত জেলায় গতকাল রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন ঝড়ের কবলে পড়ে ও আর ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে এক শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের হেলেনা বেগম (৪০), সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের মিনারা বেগম (৩৫) ও ইছালিয়া গ্রামের মাহিয়া আক্তার (১১)।

ঝালকাঠির পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আফরুজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঝড়ের সময় মাঠ থেকে গবাদিপশু আনতে গিয়েছিলেন এই তিনজন। এ সময় বজ্রপাতে তাঁদের মৃত্যু হয়।

ঝড়ে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুরে দুজন মারা গেছেন। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার মরিচাল গ্রামের রুবী বেগম (২২) ও উত্তর রানীপুর গ্রামের অনীল পাল (৮২)। প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, ঝড়ের সময় ঘরে ফেরার পথে বাতাসের তোড়ে ডোবার পানিতে পড়ে মৃত্যু হয় প্রবীণ অনীল পালের। আর ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে মারা যান গৃহবধূ রুবী বেগম।

পটুয়াখালীর বাউফলে ঝড় ও বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন আলগী গ্রামের সাফিয়া খাতুন (৮০) ও তাঁতেরকাঠি গ্রামের মো. রাতুল সিকদার (১৩)।

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল বেলা পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত বাউফলে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় বজ্রপাত। ঝোড়ো বাতাসে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় সাফিয়া খাতুনের। আর বজ্রপাতে মারা যায় শিশু রাতুল সিকদার।

ঝড়ে ভোলার লালমোহন উপজেলায় মো. হারিছ আহমেদ (৭০) নামের এক প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। একই উপজেলার চর লেঙুটিয়া গ্রামে বজ্রপাতে মারা গেছেন মো. বাচ্চু (৩৫) নামের এক ব্যক্তি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় ঝড়। সঙ্গে ছিল বজ্রপাত। ঘণ্টাখানেক ধরে চলা এই ঝড়ে গাছচাপা পড়ে মারা যান প্রবীণ হারিছ আহমেদ। আর ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় যুবক মো. বাচ্চুর।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে লিকচান সরদার (৩৫) নামের এক যুবক মারা গেছেন। ঝড়ের সময় মাঠে থাকা গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি উপজেলার চর সোনারকুড় গ্রামে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, আকস্মিক ঝড়ে কচুয়ায় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।

বজ্রপাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় মারা গেছেন একজন। ওবায়দুল্লাহ গাজী (৩৩) নামের ওই ব্যক্তির বাড়ি উপ‌জেলার কোমলপুর গ্রা‌মে।

ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ওবায়দুল্লাহ পেশায় একজন মৎস্যখামারি। পাশাপাশি গৃহস্থলীর কাজকর্ম করতেন। সকাল পৌনে নয়টার দিকে তিনি বাড়ির পাশের কানাইডাঙ্গা বিলে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলায় মরিচখেতের পরিচর্যা করতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষক মারা গেছেন। উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই কৃষকের নাম শহীদ মিয়া (৫২)।