ট্রেনে ভিড়ের কারণে পরিচালকের কক্ষে উঠতে চাওয়ায় স্কুলশিক্ষিকা লাঞ্ছিত

যশোরের নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন
ছবি: প্রথম আলো

যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় ট্রেনে উঠতে না পেরে পরিচালকের কক্ষে উঠতে চাওয়ায় এক স্কুলশিক্ষিকাকে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই শিক্ষিকার সঙ্গে থাকা এক ছাত্রী ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে রড দিয়ে পেটান ওই ট্রেনের পরিচালক।

শুক্রবার সকালে খুলনা থেকে আসা বেনাপোলগামী ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লাঞ্ছিত স্কুলশিক্ষিকা নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন ও অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লাঞ্ছিত স্কুলশিক্ষিকা প্রথম আলোকে বলেন, যশোরের ঝিকরগাছায় স্কাউটের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুই ছাত্রীকে নিয়ে সকালে নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে যান তিনি। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নওয়াপাড়া স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। অনেক চেষ্টা করেও ছাত্রীদের নিয়ে তিনি যাত্রীদের বগিতে উঠতে পারেননি। পরে তিনি দুই ছাত্রীকে নিয়ে ট্রেনের পরিচালকের কক্ষে (গার্ডরুম) ওঠার জন্য পরিচালককে অনুরোধ করেন। কিন্তু ট্রেনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁদের উঠতে না দিয়ে প্রথমে তাঁকে (শিক্ষিকা) লাথি মারেন। এতে তিনি নিচে পড়ে যান। তখন এক ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাকে রড দিয়ে পেটান তিনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের পর ট্রেনটি নওয়াপাড়া ছেড়ে চলে যায়। তিনি প্রথমে বিষয়টি নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বরত সহকারী স্টেশনমাস্টার অনুপ কুমার মণ্ডলকে জানান। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ করেন। এরপর নওয়াপাড়া স্টেশনের মাস্টার ও অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

নওয়াপাড়ার সহকারী স্টেশনমাস্টার অনুপ কুমার মণ্ডল বলেন, খুলনা থেকে আসা বেনাপোলগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে নওয়াপাড়ায় পৌঁছায়। ট্রেনটি দুই মিনিট বিরতি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যাত্রী বেশি থাকায় ট্রেনটি ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায়। স্টেশনে দাঁড়ানো অবস্থায় ট্রেনটির পরিচালকের বিরুদ্ধে একজন শিক্ষক লাথি ও মারধরের অভিযোগ করেন। এ সময় তাঁকে অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তিনি তাঁকে অফিস কক্ষে বসতে বলেন। পরে ট্রেনের পরিচালক সেখানে এলে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এরপর ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যায়।

অনুপ কুমার মণ্ডল আরও বলেন, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে খুলনা থেকে আসা চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নওয়াপাড়ায় এলে দুই ছাত্রীকে নিয়ে ওই ট্রেনে যশোরে চলে যান ওই শিক্ষিকা। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, ওই ট্রেনের পরিচালক খুলনার নয়, রাজবাড়ী হেডকোয়ার্টারের। তাঁর নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘সন্ধ্যায় ওই শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।’

অভয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘এ–সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’