সৈয়দপুরে প্রচণ্ড গরমে বাজারে ক্রেতা কম, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
তীব্র তাপপ্রবাহে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে কম। এর প্রভাব পড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিভিন্ন বাজারে। সেভাবে বেচাকেনা হচ্ছে না বাজারে। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন শাকসবজি ও কাঁচা তরকারি বিক্রেতারা। ঘন ঘন পানি ছিটিয়েও তাজা রাখা যাচ্ছে না শাকসবজি।
গতকাল মঙ্গলবার সৈয়দপুর শহরের পৌর সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রখর রোদ ও অসহনীয় গরমের কারণে ক্রেতাসাধারণ নেই বললেই চলে। আনারুল ইসলাম নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, সকাল সকাল সামান্য কিছু সবজি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু গ্রাহকই আসছে না। তা ছাড়া দ্রব্যমূল্যও কমেনি এই গরমে। একদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অপর দিকে প্রচণ্ড গরমের কারণে বাজারে মানুষ খুব আসছে না। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ সবজিই ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নাদিম নামের এক মাংস বিক্রেতা বলেন, পবিত্র রমজানের সময় প্রায় প্রতিদিনই এক–দুটি গরুর মাংস বিক্রি করেছি কিন্তু ঈদের পর প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকের আশঙ্কায় মানুষ ঘরের বাইরেই বের হচ্ছেন না। সাড়ে ৭০০ টাকা প্রতি কেজি গরুর মাংস হলেও গরমের কারণে ৬৬০–৬৮০ টাকায় বিক্রি করলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। তিনি বলেন, খাসির মাংস ও মুরগির দামও কমেছে। কিন্তু তারপরও ক্রেতা তেমন একটা নেই। এক হাজার টাকা কেজির খাসির মাংস সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় দিলেও ক্রেতাশূন্য বাজার। গরমের কারণে ২৮০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকা, ৩৭০–৩৮০ টাকার সোনালি ৩০০ টাকায় বিক্রি করলেও ক্রেতা নেই।
আমিরুল ইসলাম আরমান নামের অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদের পর বাজারে ক্রেতাসাধারণের ভিড় থাকে। আর এখন গরমের কারণে ক্রেতা নেই বলেই চলে। সারা দিনে এক হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। তবে মাছের বাজারে লোকজন দেখা গেছে।
সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী ধীমান বলেন, গরমের কারণে বর্তমানে মাছের দাম তুলনামূলক কম। সাড়ে ৩০০ টাকা কেজি দরের রুই মাছ বিক্রি করছি ২৭০–২৮০ টাকা কেজি দরে। এ কারণে ক্রেতারাও কিনছেন। এ ছাড়া কাতলা ও ছোট মাছের দামও কমেছে অনেকটা। ফলে ক্রেতাসাধারণ মাংসের চেয়ে মাছই কিনছেন বেশি।
শহরের সাহেবপাড়ার আবু হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, মুরগি এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেক বেশি। এ কারণে ছোট মাছের সঙ্গে কয়েক পদের সবজি কিনলাম। দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে–পরে একই। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের শাকসবজিই ভালো।’
সৈয়দপুর পৌর সবজি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, গরম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতা কমে গেছে। সপ্তাহখানেক আগেও দিন শেষে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকার সবজি বিক্রি হতো। অথচ আজ মাত্র ৩ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছে। পাইকারি বাজারে সবজির দামও বেড়ে গেছে। গরমের কারণে আমদানিও কম। তাই দামও বাড়তি। এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, ৫ দিন ধরে এখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। হিট অ্যালার্টের কারণে মানুষজন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে কম বের হচ্ছেন।
সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন বাজার মরিটরিং করছে। বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।