কালিয়াকৈরে সেপটিক ট্যাংক থেকে ২ নির্মাণশ্রমিকের লাশ উদ্ধার, আরেকজন অসুস্থ

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই নির্মাণশ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কালিয়াকৈরের সফিপুর পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাইরে অসুস্থ অবস্থায় আরেকজনকে পাঠানো হয় হাসপাতালে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, সেপটিক ট্যাংকে জমে থাকা গ্যাসে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত দুজন হলেন রংপুরের বদরগঞ্জের মৃত আবদুর রশিদ মিয়ার ছেলে শাহীন আলম (৩২) ও কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটের বাদশা মিয়ার ছেলে মাহবুব হাসান (৩৫)। মোহসিনুজ্জামান (৩৪) নামের আরেক শ্রমিককে অসুস্থ অবস্থায় পাঠানো হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে। তাঁরা প্রত্যেকেই ভাসমান শ্রমিক বলে জানা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সফিপুর পূর্বপাড়া এলাকায় একটি ছয়তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। কাজের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে সেপটিক ট্যাংক। এখনো খোলা হয়নি ট্যাংকের সেন্টারিং বাঁশ। এর মধ্যে সেন্টারিং বাঁশ (ঢালাইয়ের ঠিকা) খুলতে আজ কাজে আসেন চার-পাঁচজন শ্রমিক। এর মধ্যে শ্রমিকেরা ট্যাংকের সেন্টারিং বাঁশ খুলতে ট্যাংকের ভেতর নামলে এক এক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনজন। ঘটনাস্থলেই মারা যান দুজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দুজনের লাশ উদ্ধার করেন। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাঠানো হয় হাসপাতালে।

কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ইফতেখার রায়হান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সেপটিক ট্যাংকটি তিন থেকে চার দিন ধরে ঢাকা। ট্যাংকের ভেতরে সেন্টারিং বাঁশ খোলার জন্য আজ বিকেলে কয়েকজন শ্রমিক নেওয়া হয়। বাঁশ খুলতে প্রথমে শাহীন মিয়া ট্যাংকে নামেন। ট্যাংকে নামতেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে বাঁচাতে একইভাবে ট্যাংকে নামেন মাহবুব হাসান। তিনিও অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাঁদের দুজনকে বাঁচাতে বা ঘটনা বুঝতে একইভাবে ট্যাংকে নামেন মোহসিনুজ্জামান। তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়লে আশাপাশের এগিয়ে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।

ইফতেখার রায়হান বলেন, সবে ভবনটির সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো ট্যাংকে একটিমাত্র ঢাকনা। সে ঢাকনাও তিন থেকে চার দিন ধরে বালু দিয়ে ঢাকা ছিল। আবার ট্যাংকের ভেতর ছিল হাঁটুসমান পানি। এর মধ্যেই শ্রমিকেরা বাঁশ খুলতে নামলে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতর জমা গ্যাস থেকে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ির মালিক বা মিস্ত্রি কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে নিহত ব্যক্তিদের শরীরে কোনো আঘাত পাওয়া যায়নি। সেপটিক ট্যাংকটি দীর্ঘদিন আবদ্ধ থাকায় গ্যাস জমে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। কেউ অভিযোগ করেননি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।