মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা থেকে নাটোরে স্কুলছাত্র হিমেলকে হত্যা: পুলিশ

স্কুলছাত্র ফারহান জাহি হিমেলছবি: সংগৃহীত

১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা থেকে নাটোরের নলডাঙ্গায় স্কুলছাত্র ফারহান জাহি হিমেলকে (১৫) অপহরণের পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হিমেলের দুই বন্ধুসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে নাটোর জেলা পুলিশ।

আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হত্যার শিকার হিমেল উপজেলার পিপরুল গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। সে পাটুল-হাঁপানিয়া স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা পিপরুল ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার।

আরও পড়ুন

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন হলেন নলডাঙ্গার হাঁপানিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম (১৮), পিপরুল গ্রামের সজল সাহা (১৮), সড়কুতিয়া গ্রামের শিমুল ইসলাম (১৮) ও পাটুল পূর্বপাড়া গ্রামের এক কিশোর (১৭)। ওই কিশোর ও সজল নিহত হিমেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ টি এম মাইনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা ও ইফতার করার কথা বলে হিমেল বাড়ি থেকে বের হয়। ইফতারের পর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে থানায় খবর দেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান করে হিমেলের সঙ্গে মুঠোফোনে সর্বশেষ সজলের যোগাযোগের তথ্য পায়। এর পরপরই পুলিশ সজলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে তাঁর অপর এক বন্ধুকে (১৭) আটক করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ রাত দেড়টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরোনো ভবনের ভেতর থেকে ভুট্টার পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় হিমেলের লাশ উদ্ধার করে।

স্কুলছাত্র হিমেল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার শরিফুল ইসলাম, সজল সাহা ও শিমুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। রাতে পুলিশ একই এলাকা থেকে সুজন ও শিমুল নামের দুজনকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ওমর ফারুক বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খবর পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সন্দিগ্ধ চারজনকে আটক করে এবং তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা দা, চাকু, গামছা, রশি, পলিথিন, তিনটি মুঠোফোন ও একটি বাইসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

হত্যার কারণ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, মূলত ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনায় দুই বন্ধু আরও দুই তরুণের সহযোগিতায় হিমেলকে হত্যা করেন। গ্রেপ্তার চারজনকে নলডাঙ্গা আমলি আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে দোষ স্বীকার করে তাঁদের জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমীন নেলী, নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনোয়ারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।