শ্রীপুরে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে ছত্রভঙ্গ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন এ এ নিট স্পিন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এতে এক ঘণ্টা স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল, ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
অবরোধ চলাকালে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিল্প পুলিশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরে থানা–পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহম্মদ আবদুল বারিক এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকেরা প্রথমে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। দীর্ঘদিনের বকেয়া বেতন পরিশোধে কর্তৃপক্ষের অনীহায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা এক পর্যায়ে মহাসড়কে নেমে আসেন ও সড়ক অবরোধ করেন। শিল্প পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করা হয়।
অবরোধের কারণে ঢাকা ও ময়মনসিংহগামী শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। এতে মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা একটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
কারখানার একজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা অনেক দিন ধরে বেতন চাইছিলেন। কিন্তু বারবার সময় নিয়েও মালিকপক্ষ বেতন পরিশোধ করছে না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন, তবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারণে শেষ করা যায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
আরেকজন শ্রমিক মো. ইব্রাহিম বলেন, পুলিশের ধাওয়ায় অধিকাংশ শ্রমিক ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও বিকেল পর্যন্ত শ্রমিক প্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছিল।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাব জোন ইনচার্জ আবদুল লতিফ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাঁরা সেখানে কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছেন। এতে শ্রমিক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ আহত হননি।