শর্ষের আবাদ বাড়িয়ে তিন বছরে ভোজ্যতেল আমদানি ৫০ ভাগ কমানো হবে: কৃষিমন্ত্রী
বিদেশ থেকে ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে সরকার তৈলবীজের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, কৃষির উন্নয়ন হলেই দেশে শিল্পকারখানা হয়। আর এতে মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ে। দেশের কৃষি বিভাগ কর্তৃক নতুন নতুন শর্ষের জাত উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে এই তৈলবীজের আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে শর্ষের আবাদ বাড়িয়ে ভোজ্যতেল আমদানি ৫০ ভাগে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জে ‘শর্ষে ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনা ও অগ্রগতি ২০২২-২৩’ শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে এই কর্মশালার আয়োজন করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রতিবছর ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে চাহিদার প্রায় ৯০ ভাগ ভোজ্যতেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। আমাদের চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ ভোজ্যতেল দেশে উৎপাদিত হয়। চাহিদা মেটাতে আমরা শর্ষে, মসুর, চিনাবাদাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখীর মতো তৈলবীজ উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উদ্যোগটি সফল করতে জমিতে স্বল্পমেয়াদি সময়ের ধান চাষ করা হবে।’
কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাঁচটি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একটি ছিল খাদ্যশস্যের দাম কমিয়ে আনা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ২০০৯ সালে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে সারের দাম কমিয়ে আনা হয়। গত ১৪ বছরে এক টাকাও সারের দাম বাড়ানো হয়নি।
দেশে তৈলবীজ আবাদে সরকার কৃষকদের মাঝে বীজ ও সারে প্রণোদনা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছে সরকার। ভবিষ্যতেও কৃষকদের এই প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে। দেশের বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ। এর আগে কৃষিমন্ত্রী তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার কয়েকটি শর্ষেখেত পরিদর্শন করেন এবং কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন।