ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে: আইজিপি
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে বাহারুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুসল্লিরা এখানে আসেন দ্বীন ও দুনিয়ার কামিয়াবি হাসিলের জন্য, তবে কিছুদিন আগে তাঁদের মাঝে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। মতদ্বৈততা মানুষের মাঝে থাকে, তাঁদের মাঝেও হয়েছে। এটার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষই অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। আগামী ৩১ (শুক্রবার) থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা (দুই দফায়) ইজতেমা করবেন। অপর পক্ষ ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করবেন। এর মধ্যে কোনো মতদ্বৈততা নেই। উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা করবেন।’
এবারের প্রেক্ষাপটকে ভিন্ন উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে। বিশেষত জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলি এবং এখনো অনেক অস্ত্র বাইরে আছে, এ পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা আগের চাইতে সুদৃঢ় করেছি। সম্প্রতি যেসব সংঘর্ষ হয়েছে, এসবের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমার তারিখ আলাদাভাবে ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে প্রথম পর্বে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী এবং দ্বিতীয় পর্বে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের ইজতেমা পালনের কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই গত ১৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ইজতেমা মাঠে জোড় পালনকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন মুসল্লি নিহত হন।
ইজতেমার সময় পরিবর্তনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি আরও বলেন, ‘আমরা মাঝখানে একটু সময় বাড়িয়েছি, যেন প্রথম পক্ষ আমাদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেওয়ার পর পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারি। যখন আমরা মাঠ বুঝে নেওয়ার পর সেটিসফাইড (সন্তুষ্ট) হব, কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকবে না, তখন আমরা দ্বিতীয় পক্ষকে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান জানাব। এ জন্য আমরা একটু সময় নিয়েছি। এটা দুই পক্ষকে নিয়ে বসেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
আজ দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, তুরাগ নদ–সংলগ্ন ইজতেমা মাঠটিতে হাজারো মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাবলিগ জামাতের সাথি ও মাদ্রাসার ছাত্ররা ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে নির্ধারিত জায়গায় বসছেন। কেউ কেউ মূল বয়ান মঞ্চের সামনে তাবলিগের বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য শুনছেন। কেউ কেউ যুক্ত হয়েছেন মাঠ প্রস্তুতের কাজে।
আইজিপির ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম, উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন এবং মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বি মাহফুজুল হান্নানসহ প্রমুখ।