সুদের টাকা না পেয়ে দম্পতিকে মারধর করে গরু নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় সুদের টাকা না দেওয়ায় স্বামী-স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে গোয়াল থেকে গরু নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একজনের বিরুদ্ধে। তাঁর নাম শহীদ মিয়া (৪০)। গতকাল বৃহস্পতিবার গন্ডা ইউনিয়নের সাদার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই গ্রামের শামছুনাহার (৪৮) ও তাঁর স্বামী বাবুল মিয়া (৫৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী শহীদ মিয়ার কাছ থেকে দুই বছর আগে শতকরা ১০ টাকা হার সুদে ১০ হাজার টাকা ধার নেন বাবুল মিয়া। এরপর নিয়মিত সুদ পরিশোধ করেন। সম্প্রতি সুদে-আসলে একসঙ্গে ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাবুল ও তাঁর স্ত্রী ঋণমুক্তির জন্য শহীদ মিয়াকে বলেন। কিন্তু শহীদ মিয়ার দাবি বাবুলের কাছে তিনি আরও এক লাখ টাকা পাবেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে বাবুল মিয়ার বাড়িতে এসে শহীদ মিয়া, তাঁর চাচাতো ভাই আবুল মিয়া ও হলুদ মিয়া এক লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় বাবুল ও তাঁর স্ত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁদের বেধড়ক মারধর করে গোয়াল থেকে একটি গরু নিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে বাবুল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুদখোর শহীদ মিয়া ও তাঁর চাচাতো ভাইদের হামলায় আমার ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে। আমার স্ত্রীর বাম হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছে। মারধরের পর তাঁরা গোয়ালে থাকা একটি গরু ও ঘরে থাকা টাকাও নিয়ে গেছে।’

তবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে অভিযুক্ত শহীদ মিয়া, তাঁর চাচাতো ভাই আবুল মিয়া ও হলুদ মিয়ার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার খবরে পুলিশ আসার পর থেকে তাঁরা গাঢাকা দিয়েছেন। বাবুল মিয়ার প্রতিবেশী আছাব উদ্দিন বলেন, সুদে-আসলে দুই বছর আগে টাকা শোধ করে দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু শহীদ মিয়া এখনো এক লাখ টাকা দাবি করছেন। তবে ইউপি সদস্যের সহায়তায় পরে বাবুলের গরুটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত শহীদ মিয়া ও তাঁর চাচাতো ভাইয়েরা পলাতক। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।