নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার দৃশ্যমান বিচার হতে হবে: বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী (এ্যানি) বলেছেন, ‘২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে গিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার থেকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে হত্যার আদেশ দেন। বিগত ১৫-১৬ বছরে হত্যা, গুম, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জীবন বিপর্যস্ত করেছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দৃশ্যমান বিচার হতে হবে। নির্বাচনের আগেই সেই বিচার হতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব (দুলু) সভাপতিত্ব করেন।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দী রেখে মেরে ফেলতে চেয়েছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ ছিলেন, অনেক অনুনয়-বিনয় করেও তাঁর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারি নাই। তারা (আওয়ামী লীগ) দিনের ভোট রাতে করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছিল, আর এই অবৈধ কাজে কালোটাকার লোভে সহায়তা করেছিল প্রশাসনের লোকজন।’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী আরও বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছরে দেশের সব সেক্টরকে ধ্বংস করে গেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দেশের সব শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা প্রণয়ন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে এই ৩১ দফার সঙ্গে সম্পৃক্ত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ৩১ দফায় রয়েছে, এক ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে গ্রহণযোগ্য ক্ষমতার যেন ভারসাম্য রক্ষা হয়, সেই কথা বলা হয়েছে। ৩১ দফায় জাতীয় সংসদের ৭০ অনুচ্ছেদে আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন, অর্থবিল ও নিরাপত্তা বিল ছাড়া অন্য বিষয়গুলোতে দলের এমপিরা নিজ নিজ মতামত দিতে পারবেন—সেই কথা বলা হয়েছে।’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘এক ব্যক্তির শাসন থাকবে না, দেশের সবকিছু এক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত থাকবে না। এমন মৌলিক পরিবর্তনের কথা রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফায় রয়েছে। আমরা সেটা প্রত্যেকটা বিভাগের জেলাগুলোতে প্রোগ্রাম করে অবগত করছি। এ জন্য এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করছি এবং করব। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার প্রশিক্ষণ, সেমিনার, মতবিনিময় সভা, প্রচারপত্র ও বুকলেট তৈরি ও বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং থাকবে, যাতে দেশের মানুষ এ বিষয়ে অবহিত ও সচেতন হতে পারেন।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লালমনিরহাট জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ, জেলার পাঁচটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ৪৫টি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পর্যবেক্ষক হিসেবে সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, খেলোয়াড় ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন সাবেক তিন সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম, নেওয়াজ হালিমা ও শাম্মি আখতার।