দ্রুত বিচার না হলে আবার আসব গোপালগঞ্জে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আজকে মুজিববাদীরা বাধা দিয়েছে, তাদের জবাব দেওয়া হবে। আমরা যদি আজকে এখানে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিই, সারা বাংলাদেশ এই গোপালগঞ্জে এসে জড়ো হবে। কিন্তু আমরা সময় দিয়ে যাচ্ছি।’
আজ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে এনসিপির পথসভায় নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। এই পথসভার আগে গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
পৌর পার্কের এই পথসভা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কোন সাহসে বাধা দিয়েছে? কোন সাহসে মুজিববাদীরা এখনো গোপালগঞ্জ আশ্রিত রয়েছে? কারা আশ্রয় দিয়েছে? দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার যদি না হয়, আমরা আবার আসব গোপালগঞ্জে। নিজ হাতে দায়িত্ব নিয়ে গোপালগঞ্জকে মুজিববাদীদের থেকে মুক্ত করব ইনশা আল্লাহ।’
গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আপনারা যাঁরা দূর থেকে শুনছেন, আমরা আজকে গোপালগঞ্জে এসেছিলাম, দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা নিয়ে, কোনো যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে নয়। শান্তি এবং দেশ গড়ার আহ্বান নিয়ে গোপালগঞ্জ আজ এসেছি। গোপালগঞ্জবাসী, আমরা গোপালগঞ্জের নাম বদলাতে আসি নাই। আমরা এসেছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে, এই নতুন বাংলাদেশে গোপালগঞ্জের মানুষের অধিকার যাতে রক্ষা করা হয়, সেই প্রতিশ্রুতি দিতে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের মধ্যে আমরা বলেছিলাম, বাধা দিলে বাধবে লড়াই, সেই লড়াইয়ে জিততে হবে এবং সেই লড়াই আমরা জিতেছিলাম। আজ আবারও বাধা দেওয়া হয়েছে, দ্বিগুণ গতিতে এর জবাব আমরা দেব ইনশা আল্লাহ।’ গোপালগঞ্জের মানুষের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যাঁরা গণ–অভ্যুত্থানের পক্ষে রয়েছেন, নতুন বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছেন, আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে এই গোপালগঞ্জ যেন মুজিববাদীদের আশ্রয়কেন্দ্র না হয়ে উঠতে পারে। যদি পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ হয়, নিজেদের রক্ষা করার দায়িত্ব, নিজেদের জেলার মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের নিজেদেরই নিতে হবে। যে রকমটি আমরা গণ–অভ্যুত্থানে নিয়েছিলাম।’
গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসীদের আস্তানা সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মুজিববাদীরা মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে, গোপালগঞ্জকেও কলুষিত করেছে। সেই গোপালগঞ্জকে আমরা আবার পুনরুদ্ধার করব, আবার সমুন্নত করব।’
‘গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের হয়ে উঠতে পারে নাই’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের হয়ে উঠতে পারে নাই। আপনারা বাংলাদেশের হয়ে উঠুন। আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে গোপালগঞ্জকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে সংকটে ফেলেছে। আমরা গোপালগঞ্জবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, গোপালগঞ্জও বাংলাদেশের, ফেনীও বাংলাদেশের, বগুড়াও বাংলাদেশের। সবার জন্য আমরা সমানভাবে লড়াই করব। আপনাদের আমরা জালিমের শাসন থেকে মুক্ত করেছি। আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা একসঙ্গে ইনসাফের বাংলাদেশ গঠন করব।’
শেখ হাসিনাকে স্বার্থপর উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘প্রিয় গোপালগঞ্জবাসী, হাসিনা আপনাদের ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। গোপালগঞ্জকে যদি উনি ধারণ করতেন, তাহলে ভারতে না গিয়ে গোপালগঞ্জেই আসতেন। উনি স্বার্থপর। উনি ফ্যামিলির মানুষ ছাড়া গোপালগঞ্জবাসীর কথা একবারও ভাবেন নাই।’
সমাবেশ শেষে গোপালগঞ্জের মাটি থেকে মুজিববাদীদের আস্তানা ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেন হাসনাত আবদুল্লাহসহ এনসিপির অন্য নেতা–কর্মীরা।