নোয়াখালীর মেঘনা নদীতে ২ জেলে গুলিবিদ্ধ, ৫ জনকে অপহরণের অভিযোগ

গুলিবিদ্ধ দুই জেলেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর মেঘনা নদীতে মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জলদস্যুদের গুলিতে দুই জেলে গুলিবিদ্ধসহ পাঁচজন আহত হন। এ সময় দুর্বৃত্তরা আরও পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ চ্যানেলের কাছে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন জিল্লুর রহমান (৩২) ও নুর আলম মিয়া (৩৫)। তাঁদের মধ্যে জিল্লুর নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে এবঙ নুর আলম একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। আহত দুজনকে গতকাল রাত ১১টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ছাড়া জলদস্যুরা পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তাঁরা হলেন মো. রাজু (১৩), জুয়েল (২৬), আবদুর রহমান (২২), হোসেন (৪০) ও মো. ইসমাইল (৪০)।

হামলার শিকার জেলেরা অভিযোগ করেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ চ্যানেল এলাকায় খোপ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে মাছ শিকার করে আসছেন। কিছুদিন আগে থেকে মেঘনা নদীর মাছ শিকারের ওই খোপ দখলের চেষ্টা চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। গতকাল বিকেলে কেফায়েত বাহিনী ওই খোপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে মাছ ধরার দুটি ট্রলার নিয়ে সেখানে যান ভুক্তভোগী জেলেরা।

একপর্যায়ে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল দলবল নিয়ে ওই দুই ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যান। একপর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে দুই জেলে গুলিবিদ্ধসহ পাঁচজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় জলদস্যু বাহিনী পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

হামলার শিকার দুটি ট্রলারের মালিক আলাউদ্দিন মাঝি। আলাউদ্দিন মাঝির ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মাছের খোপ দখল করাকে কেন্দ্র করে কেফায়েত বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের দুজনকে গুলি করে এবং আরও পাঁচজনকে আহত করে দুটি ট্রলার ডাকাতি করে নিয়ে গেছে। আহত জেলেদের রাতেই নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কেফায়েত বাহিনীর প্রধান কেফায়েত উল্যার মুঠোফোনে কল করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, মেঘনা নদীর সন্দীপ চ্যানেলের কাছে মাছের খোপ দখলকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় সুবর্ণচরের কয়েক জেলে আহত হয়েছেন বলে শুনেছেন। ঘটনাস্থলটি নদীতে এবং মতিয়া ও সন্দীপ এলাকায় হওয়ার কারণে তাঁরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে পারেননি।