টেঁটাযুদ্ধমুক্ত গ্রামের দাবিতে বাসিন্দাদের মানববন্ধন

গ্রামে টেঁটাযুদ্ধ বন্ধের দাবিতে এলাকার মানুষের মানববন্ধন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নরসিংদী সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামেছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল নজরপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রাম টেঁটাযুদ্ধমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় আলীপুর গ্রামের নতুন বাজার সেতুসংলগ্ন এলাকায় এ মানববন্ধন হয়। ‘আলীপুরের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে টেঁটাযুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান পাঁচ শতাধিক মানুষ। পাশাপাশি জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০ বছর ধরে আলীপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে টেঁটাযুদ্ধের ঘটনা ঘটছে। এক পক্ষে বাবা আজমল মনা ও ছেলে আনোয়ার মনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপর পক্ষে রয়েছেন মো. ইসমাইল কোম্পানি নামের একজন। নানা ঘটনায় কয়েক বছর পরপরই এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে টেঁটাযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তারা বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এ ছাড়া প্রতিটি পরিবার থেকে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা তোলা হয়।

আরও পড়ুন

গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত ১৯ জুন আলীপুর গ্রামে দুই পক্ষের টেঁটাযুদ্ধে কাজী ফারুক (৩২) নামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ছাড়া একজন উপপরিদর্শকসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এ ঘটনায় গ্রামজুড়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের লোকজনই এলাকা ছাড়েন। পরে দুই পক্ষকেই এলাকায় মিলেমিশে থাকার সুযোগ করে দেন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জালাল সরকার। তবে গত আট দিন আগে আজমল মনা ও আনোয়ার মনা আবার ইসমাইল কোম্পানির লোকজনের ওপর হামলা চালান। পাল্টা হামলায় তাঁরা দুজনসহ ওই পক্ষের লোকজন বর্তমানে এলাকাছাড়া।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নজরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন জামালদী, সাবেক ইউপি সদস্য হাজি সুলতান, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. গোলজার জামালদী। গ্রামবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন আনোয়ার মোল্লা, আলী হোসেন, মো. সালাম বেপারি, মো. ইসমাইল হোসেন, মিলন মিয়া প্রমুখ।

আরও পড়ুন

ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন বক্তব্যে বলেন, দুর্ধর্ষ টেঁটাবাজ আজমল মনা ও তাঁর ছেলে আনোয়ার মনা আলীপুরের অশান্তির মূল হুতা। তাঁদের কারণেই এলাকায় টেঁটাযুদ্ধের নামে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তাঁদের ক্যাডার বাহিনীর রক্তখেলা ও আধিপত্যের হাত থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতা চান তাঁরা।