ইউটিউব দেখে বোমা তৈরির অভিযোগ, বিস্ফোরণে তরুণের হাতের কবজি উড়ে গেছে

ফেনী জেলার মানচিত্র

ফেনীর সোনাগাজীতে বোমা বিস্ফোরণে আবদুল্লা আল নোমান নামের এক তরুণের হাতের কবজি উড়ে গেছে। আহত হয়েছেন আবদুল আজিজ নামের আরেক তরুণ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই দুই তরুণসহ পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, ইউটিউব দেখে দুই বন্ধু মিলে বোমা তৈরির চেষ্টাকালে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আড়কাইম গ্রামে একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন আড়কাইম গ্রামের ছমাদ আলী ভূঞা বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে আবদুল আজিজ (২১), উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের সমপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে আহত আবদুল্লাহ আল নোমান (১৯), আজিজের বড় ভাই মোমিনুল হক (২৮) ও অজ্ঞাতনামা আরও দুজন। মামলার প্রধান আসামি আবদুল আজিজকে রাতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

রাত সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ করে বিকট শব্দে পুরো বাড়ি কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণে নোমানের বাঁ হাতের কবজি উড়ে যায়।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আবদুল্লাহ আল নোমান আড়কাইম গ্রামে নানার বাড়ি ছমাদ আলী ভূঞা বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বন্ধু আবদুল আজিজের ঘরে বসে ইউটিউব দেখে আবদুল্লাহ আল নোমান বোমা তৈরির চেষ্টা করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে বিকট শব্দে পুরো বাড়ি কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণে নোমানের বাঁ হাতের কবজি উড়ে যায়। আবদুল আজিজও সামান্য আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আবদুল আজিজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

তবে আবদুল আজিজের বাবা রুহুল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার ছেলে আবদুল আজিজ ও ছেলের বন্ধু আবদুল্লাহ আল নোমান ইউটিউব দেখে বোমা তৈরির চেষ্টা করেনি। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল তাদের ফাঁসাতে ও হয়রানি করতে নানা কল্পকাহিনি তৈরি করছে। মূল ঘটনা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে খেলার সময় বাড়ির বাইরে লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো গোলাকার বল আকৃতির একটি বস্তু পায় আজিজ ও নোমান। নোমান বল ভেবে সেটি বাড়িতে এনে জানালার পাশে রাখে। পরে সেটি বিস্ফোরণে তার হাতের কবজি উড়ে যায়। দ্রুত আমরা নোমানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আজিজও সামান্য আঘাত পেয়েছে।’

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে রাতেই থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। গ্রেপ্তার আবদুল আজিজকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।