বাগেরহাটে ২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হবে

মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।ফাইল ছবি

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়ের জন্য ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এতে দুই লাখ ছয় হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার জনগণকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক।

দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা শেষে বাগেরহাটে জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, টাকা ও চাল মজুত রাখা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে। তবে জেলার কোথাও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব চোখে পড়েনি। সারা দিনই রোদের তাপের সঙ্গে ছিল ভ্যাপসা গরম। দুপুরে একপশলা বৃষ্টির পর গরম আরও বেড়েছে।

তবে এমন গরমকে ঝড়ের তীব্রতা বাড়ার সংকেত হিসেবে দেখছেন এলাকার প্রবীণেরা। জেলার শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী গ্রামের সোহরাব আলী ফরাজী (৬৫) বলেন, ‘আগের ঝড়গুলোতে দেখেছি, এমন গুমোট আবহাওয়া হয়। গরম বাড়ে, এরপর ঝড়বৃষ্টিও বাড়ে। তেমন কিছু না হোক, তা–ই চাই।’

তবে গতকাল শনিবার স্বাভাবিক ছিল মোংলা বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ। দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলার জরুরি প্রস্তুতি সভা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় জানানো হয়, ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেওয়া হলে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।

বন্দর সূত্র জানায়, বর্তমানে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ায় চারটি জাহাজ, বেসক্রিক এরিয়ায় একটি ও জেটিতে দুটি জাহাজসহ মোট ছয়টি বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। নিরাপত্তার জন্য এরই মধ্যে জাহাজগুলোকে চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে নোঙর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলায় জেলেরা এখন সাগরে নেই বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী। আর সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা ফিরে আসছেন।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, জেলায় ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কাজ হয়েছে। এই ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের দুই কিলোমিটার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া অন্য পোল্ডারগুলোর বেশ কিছু পয়েন্ট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কোথাও যাতে বাঁধ ভেঙে যেতে না পারে, সে জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।