শেষ সম্বল তিনটি গরু নিয়ে গেল চোর, দিশাহারা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরিবারটি
ভোলা সদর উপজেলায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী একটি পরিবারের শেষ সম্বল তিনটি গরু চুরি হয়েছে। গরু হারিয়ে প্রতিবন্ধী পরিবারটি দিশাহারা হয়ে পড়েছে। রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কন্দ্রকপুর গ্রাম থেকে গরুগুলো চুরি হয়।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল হক বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. কামাল হোসেনের (৪০) সঙ্গে তানজিলা আক্তারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির তিন সন্তানও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাওয়া কিছু ভাতা আর স্থানীয় লোকজনের দেওয়া সহায়তার দিন কাটান তাঁরা। কষ্ট করে একটি গাভি কিনে লালন-পালন করছিলেন। সেটি থেকে দুটি বাচ্চা হয়েছে। মা গরুটি সাত মাসের গাভিন। এমন অবস্থায় গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরুই চুরি হয়ে গেছে।
রাজাপুর ইউনিয়নের দফাদার কলিমুদ্দিন বলেন, ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কন্দ্রকপুর গ্রামে কামাল হোসেনের প্রতিবেশী সিরাজেরও একটি গরু চুরি হয়েছে। আরও চার-পাঁচটি পরিবারের গরু গোয়ালঘর থেকে ছেড়ে দিলেও নিতে পারেনি চোরেরা।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কামাল হোসেন বলেন, গরু খোঁজার জন্য সপরিবার তাঁরা পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুরে আছেন। সেখানের একটি হাটে চোরাই গরু বিক্রি হয়। সেখানে খোঁজখবর নেবেন।
কামালের স্ত্রী তানজিলা আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তাঁর তিন কুলে কেউ নেই। চেয়ে–চিন্তে সংসার চালান। অনেক কষ্টে গরু কিনেছিলেন। সেই গরু চোরে নিয়ে গেছে। এখন কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গরুর দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে প্রতি রাতে ভোলার কোথাও না কোথাও গরু চুরি হচ্ছে। এর মধ্যে ভোলার পরানগঞ্জে মাটির নিচ থেকে পুলিশ একাধিক গরুর হাড়গোড়, পা-মাথা, চামড়া উদ্ধার করেছে।
ভোলার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির বলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি গরুচোর চক্রের সন্ধান পেয়েছেন। এ দলে ১৭ জন আছে। ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কামাল হোসেনের গরুও খুঁজে পাবেন বলে আশা করেন তিনি।