উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে গুলি করে আরেক রোহিঙ্গাকে হত্যা

উখিয়া উপজেলার একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালীর তানজিমারখোলা আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৫) সন্ত্রাসীদের গুলিতে শফিকুর রহমান (২৪) নামের আরেক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আশ্রয়শিবিরের ই-৩ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শফিকুর ক্যাম্প-১৫ আশ্রয়শিবিরের জি-৪ ব্লকের বাসিন্দা ফজল করিমের ছেলে। রাতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবির থেকে (ক্যাম্প-৯) থেকে তুলে নিয়ে কবির আহমদ (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ১৫ থেকে ২০ জনের সশস্ত্র দল গতকাল বিকেলে ক্যাম্প-১৫ আশ্রয়শিবিরের ই-৩ ব্লকের ইসমাইলের ঘরে সামনে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর পাশের রাস্তার ওপর থেকে রোহিঙ্গা তরুণ শফিকুর রহমানকে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা। এরপর মাথা ও বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পূর্বশত্রুতার জের এবং আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জানিয়ে ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

আশ্রয়শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতির সময় আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি, সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন। মাদকের টাকা ভাগাভাগি, পূর্বশত্রুতার জের ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারে দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আরও কয়েকটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী এ ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। ইয়াবার টাকার সন্ত্রাসীরা সংগ্রহ করছে অস্ত্রশস্ত্র।

আরও পড়ুন

পুলিশ বলছে, ৭ মে গভীর রাতে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৩) জি-১ ব্লকে হামলা চালায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীরা। এ সময় চারদিক থেকে ঘিরে সাধারণ রোহিঙ্গারা আরসার একজন কমান্ডারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় তিনজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন।
রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, মূলত, এর প্রতিশোধ নিতে আরসা সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গাদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে পাঁচ মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ১১ জন আরসা সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।